চোখে চশমা, মাথায় পাকা চুল, হুইলচেয়ারে বসা অসাধারণ এবং প্রতিভাবান বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং গত ১২ মার্চ ২০১৭ তারিখে মারা যান।
স্টিফেন হকিংকে মহাবিশ্ব সৃষ্টির রহস্য ‘বিগ ব্যাং থিওরি’র প্রবক্তা বলা হয়। এছাড়াও পদার্থবিজ্ঞানের ইতিহাসে অন্যতম সেরা তাও্বিক হিসেবে পরিচিত তিনি।
স্টিফেন হকিং এর পুরো নাম স্টিফেন উইলিয়াম হকিং। স্টিফেন হকিং ১৯৪২ সালের ৮ জানুয়ারি ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র বাইশ বছর বয়সে শারীরিকভাবে অচল এবং এমায়োট্রুফিক ল্যাটারাল স্কেরোসিসে (এক প্রকার মটর নিউরন রোগ) আক্রান্ত হন তিনি। কিন্তু শারীরিক অক্ষমতা তাকে রুখে পারেনি। তিনি তার গবেষণাকর্ম চালিয়ে গেছেন।
হকিং এর বাবা ড. ফ্রাঙ্ক হকিং ছিলেন একজন জীববিজ্ঞান গবেষক ও মা ইসোবেল হকিং ছিলেন রাজনৈতিক কর্মী।
স্টিফেন হকিং এর বাবার ইচ্ছে ছিল তার সন্তান বড় হয়ে একজন চিকিৎসক হবেন। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই হকিং এর আগ্রহ ছিল বিজ্ঞান ও গণিতের প্রতি। এরপরও মহাবিশ্বের অজানা বিষয়গুলো নিয়ে তিনি সবসময় উৎসুক ছিলেন।
স্টিফেন হকিং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের লুকাসিয়ান অধ্যাপক পদে ছিলেন এবং ২০০৯ সালে তিনি এই পদ থেকে অবসর নেন। এছাড়াও রয়্যাল অব আর্টসের ফেলো এবং পন্টিফিকাল একাডেমি অব সায়েন্সের আজীবন সদস্য ছিলেন তিনি।
স্টিফেন হকিং তার এই ৭৬ বছরের জীবনে বহু বই লিখেছেন। তবে ১৯৮৮ সালে ‘আ ব্রিফ হিস্ট্রি অফ টাইম’ এ বইটির মাধ্যমে সবার কাছে বিখ্যাত হয়ে ওঠেন তিনি। এ বইটিতে তিনি মহাবিশ্বের সৃষ্টি ও রহস্য সম্পর্কে তথ্য দেন। এছাড়াও স্টিফেন হকিং ‘ব্ল্যাক হোলস অ্যান্ড বেবি ইউনিভার্স অ্যান্ড আদার এসেইস, ‘দ্য নেচার অব স্পেস অ্যান্ড টাইম, ‘দ্য লারজ, দ্য স্মল অ্যান্ড দ্য হিউম্যান মাইন্ড’ ইত্যাদি বই রচনা করেন।
প্রিন্স অব অস্ট্রিয়ান্স পুরস্কার, জুলিয়াস এডগার লিলিয়েনফেল্ড পুরস্কার, উলফ পুরস্কার, কোপলি পদক, এডিংটন পদক, হিউ পদক, আলবার্ট আইনস্টাইন পদকসহ বিভিন্ন পুরস্কার লাভ করেন।
হকিং এর সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব হলো আইনস্টাইন এর সাধারণ আপেক্ষিকতা ও বোর হাইজেনবার্গের কোয়ান্টাম তও্বকে মিলিয়ে দেওয়া।
হকিং ছিলেন বর্তমান সময়ের সেরা বিজ্ঞানীদের মধ্যে একজন। তার প্রতিভা, জীবনসংগ্রাম ও অধ্যাসায় ছিল অতুলনীয়।