খোকার জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮তম জন্মবার্ষিকী পালিত হচ্ছে। শিশুদের প্রতি তার অপরিসীম ভালোবাসার জন্য বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে শিশুদের জন্য উৎসর্গ করে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
খোকার জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস

শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে প্রথম মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হয়ে এ ঘোষণা দেন। পরের বছর থেকে দিবসটি পালন শুরু হয়। তারপর ক্ষমতা বদল হলে জাতীয় শিশু দিবস পালনের রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা বন্ধ হয়ে যায়। তবে বেসরকারি ও দলীয় পর্যায়ে পালন করা হয়ে আসছিল। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হলে আবার রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয় শিশু দিবস পালন শুরু হয়।

বঙ্গবন্ধুর সহযোদ্ধা, নিকটজন ও বিভিন্ন লেখকের ভাষ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর শিশুপ্রীতির কথা জানা যায়। স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি যখন সবার বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেছেন, তখনও তিনি শিশুদের সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করতেন। শিশুদের কোনো সমাবেশে গেলে বা শিশুরা গণভবনে তার কাছে গেলে, তিনি শিশুর মতো তাদের সঙ্গে মিশে যেতেন। ১৯৬৩ সালে শেখ মুজিবুর রহমান তখনো বঙ্গবন্ধু কিংবা জাতির পিতা উপাধি পাননি। জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে সেই সময় কচিকাঁচার মেলা আয়োজিত শিশু আনন্দমেলায় এসেছিলেন তিনি। সেখানে বলেছিলেন এই পবিত্র শিশুদের সঙ্গে তিনি মিশেন মনটাকে একটু হালকা করার জন্য। তার এই ছোট্ট একটি বক্তব্য শিশুদের প্রতি তার আবেগকে ফুটিয়ে তুলেছিল।

কচিকাঁচার মেলা, খেলাঘরসহ অন্যান্য শিশু সংগঠনগুলোর অনুষ্ঠানে যেতেন বঙ্গবন্ধু। কিশোরী মেয়ে শেখ হাসিনাকে কচিকাঁচার আসরে ভর্তিও করিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। শিশু থেকে বৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুকে সবাই মুজিব ভাই বলে ডাকতেন। এ সম্বোধন তিনি পছন্দও করতেন। তাই বয়সের ব্যবধান কখনোই বাঁধা হয়ে উঠত না। শিশুদের নির্যাতন, নিপীড়ন ও অধিকার নিশ্চিত করতে ১৯৭২ সালে শিশু আইন তৈরি করেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বিশ্বাস করতেন শিশুরাই দেশের ভবিষ্যৎ সোনার বাংলা গড়তে পারবে ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।

তার বাবার নাম শেখ লুৎফর রহমান এবং মায়ের নাম সায়েরা খাতুন। তাদের চার কন্যা ও দুই পুত্রের সংসারে শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন তৃতীয়। শৈশব-কৈশোরে বাবা-মা তাকে আদর করে খোকা বলে ডাকতেন।

১৯২৭ সালে শেখ মুজিব গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। তখন তার বয়স ছিল সাত বছর। ১৯২৯ সালে নয় বছর বয়সে তিনি গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন এবং এখানেই ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন।

১৯৩৪ থেকে চার বছর তিনি বিদ্যালয়ের পাঠ চালিয়ে যেতে পারেননি। কারণ তার চোখে জটিল রোগের কারণে সার্জারি করাতে হয়েছিল এবং এ থেকে সম্পূর্ণ সেরে উঠতে বেশ সময় লেগেছিল। ১৯৩৭ সালে গোপালগঞ্জে মাথুরানাথ ইনস্টিটিউট মিশন স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন তিনি। এরপর গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছিল ১৯৩৯ সালে মিশনারি স্কুলে পড়ার সময় থেকেই। এরপর তিনি হয়ে উঠেন স্বাধীনতাকামী মানুষের দিশারী।

তিনি ১৯৪২ সালে এসএসসি এবং ১৯৪৭ সালে কলকাতার অধীনস্থ ইসলামিয়া কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৩৮ সালে আঠারো বছর বয়সে তার সাথে ফজিলাতুন্নেসার বিয়ে হয়। এই দম্পতির ঘরে দুই মেয়ে এবং তিন ছেলের জন্ম হয়। মেয়েরা হলেন শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা। আর ছেলেরা হলেন শেখ কামাল, শেখ জামাল এবং শেখ রাসেল।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com