গোঁফদাড়ি তার ধপধপে সাদা, কলার আর হাতে সাদা ফার ওয়ালা লাল টুকটুকে গাউন আর টুপি। হরিণের স্লেজে চেপে থলে ভর্তি উপহার নিয়ে আসেন তিনি। লক্ষী ছেলেমেদের দিয়ে যান মজার মজার উপহার। আর তাকে দেখে আনন্দে ভরে উঠে শিশুদের মন। তিনি শিশুদের প্রিয় সান্টা ক্লজ।
খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব হলো বড়দিন। আর বড়দিনে শিশুদের প্রধান আকর্ষণ সান্টা ক্লজ। পৃথিবীজুড়ে যার পরিচয় সান্টা।
২৪ ডিসেম্বর রাতে কিংবা বড়দিনের প্রথম প্রহরে চুপিচুপি শিশুদের উপহার দিয়ে যান, সান্টা। এ সময়টাকে বলা হয় ‘ক্রিসমাস ইভ’। সেই আনন্দে রাতে তাদের ঘুম আসে না। ইউরোপের অনেক দেশে সান্টা হাজির হয় ৬ ডিসেম্বর। কখনও আবার বড়দিনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে বিলিয়ে যান চকলেট আর খেলনা।
সুইডেন বা নরওয়েতে শিশুরা সান্টার জন্য রাখে রাইস পরিজ। অ্যা্যারল্যান্ডে রাখা হয় বড়দিনের পুডিং।
রিডার্স ডাইজেস্টের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায় জাপানে শিশুরা ঘুম থেকে উঠে বালিশের নিচে পায় বড়দিনের উপহার। হল্যান্ডের শিশুরা সান্টার হরিণের জন্য গাজর রেখে দেয়। সান্টা তাদের দিয়ে যায় মিষ্টি।
এখন বিভিন্ন দোকান, শপিং মল কিংবা হোটেলের সামনে সান্টা ক্লজের সাজে থাকেন অনেক বুড়ো। শিশুদের সাথে খেলাধুলা আর হাসি-ঠাট্টায় মেতে ওঠেন তারা। অনেক শিশুকে উপহার দেওয়া হয় খেলনা।
সান্টাদের সাজের উৎপত্তি জার্মানি বংশোদ্ভূত আমেরিকান কার্টুনিস্ট থমাস নাস্টের হাতে। নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক নিবন্ধ থেকে জানা যায় তিনি হারপার্স উইকলি ম্যাগাজিনে সান্টা ক্লজের বেশ কিছু ছবি আঁকেন। ১৮৬৩ থেকে ১৮৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি বড়দিন নিয়ে হারপার্স উইকলিতে ৩৩ টি ছবি আঁকেন।
কিন্তু কোথা থেকে এলো এ সান্টা ক্লজ?
গ্রামাঞ্চলে গিয়ে অসুস্থ ও গরীবদের সাহায্য করতেন এই সাধু। সান্টা ক্লজ চরিত্র গড়ে উঠেছে এ সন্ন্যাসীর জীবন থেকেই। নেদারল্যান্ডসের মানুষেরা সেন্ট নিকোলাসকে ডাকে সিন্টার ক্লাস। অবশেষে আমেরিকায় এ চরিত্র পরিচিত হয়ে উঠে সান্টা ক্লজ নামে। ইংল্যান্ডে তাদের পরিচয় ফাদার ক্রিসমাস নামে।
অনেকে মনে করেন খ্রিস্টপূর্ব যুগে দেবতা ওডিনের নামে উপহার দেওয়ার প্রথা ছিল। সেই প্রথা থেকেই ধীরে ধীরে বড়দিনের উপহার দেওয়ার প্রথা গড়ে উঠে।