বিবেকানন্দ ছিলেন একাধারে বক্তা, সন্ন্যাসী, দার্শনিক, লেখক ও সংগীতজ্ঞ।
তার পিতৃপ্রদত্ত নাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত। কেউ কেউ নরেন বলেও ডাকত।
তিনি ১৮৬৩ সালের ১২ জানুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে জন্ম নেন।
বিবেকানন্দের বাবা বিশ্বনাথ দত্ত, যিনি কলকাতা উচ্চ আদালতের আইনজীবী ছিলেন। বিবেকানন্দরা ছিলেন নয় ভাই-বোন।
তিনি রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের কাছ থেকে দীক্ষা নেন। সেখানেই তিনি শেখেন, সকল জীবই ঈশ্বরের প্রতিভূ; তাই মানুষের সেবা করলেই ঈশ্বরের সেবা করা হয়।
বিবেকানন্দ ভারতীয় উপমহাদেশ ভালোভাবে ঘুরে দেখা শুরু করেন এবং ব্রিটিশ ভারতের আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে প্রত্যক্ষ জ্ঞান অর্জন করতে থাকেন।
তিনি ভারতের সর্বব্যাপী দারিদ্র্যের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছিলেন, এই দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্যই ভারতে জাতীয় নবজাগরণের প্রয়োজন আছে। তার জাতীয়তাবাদী ধারণা ভারতীয় দার্শনিক ও রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাবিত করেছিল।
শ্রী অরবিন্দ বলেছিলেন, “বিবেকানন্দ ভারতকে আধ্যাত্মিক চেতনায় জাগরিত করেছিলেন।”
পাশ্চাত্য দেশগুলি ভ্রমণ করার পর ১৮৯৭ সালের ১৫ জানুয়ারি বিবেকানন্দ শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে এসে পৌঁছান। এরপর তিনি দক্ষিণ ভারতের রামনাদে আসেন।
ওই বছরই ২০ জানুয়ারি তিনি চেন্নাই হয়ে কলকাতা পৌঁছান। এরপর বিবেকানন্দ ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ভ্রমণ করেন।
১৯ জুন তিনি আলমোড়া পৌঁছান। এই সময়ের মধ্যে তার দেওয়া বক্তৃতাগুলিই 'লেকচারস ফ্রম কলম্বো টু আলমোড়া' বইতে সংকলিত হয়েছে। এই বইতে মোট ১৭টি বক্তৃতা পাওয়া যায়।
১৮৯৩ সালে স্বামী বিবেকানন্দ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ব ধর্ম মহাসম্মেলনে যোগ দেন। সেখানে তিনি বিশেষ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। এরপর ১৮৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইংল্যান্ডের নানা শহরে ভ্রমণ করে একাধিক বক্তৃতা দেন। ১৮৯৭ সালে তিনি কলম্বো হয়ে ভারতে ফিরে আসেন।
১৮৯৭ সালের ১৫ জানুয়ারি বিবেকানন্দ কলম্বো আসেন। সেখানে তাকে অভ্যর্থনা জানানো হয়।
ভারতে বিবেকানন্দের জন্মদিনটিকে এখন ভারতের জাতীয় যুব দিবস হিসেবে পালিত হয়।
বিবেকানন্দের রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য শিকাগো বক্তৃতা, কর্মযোগ, রাজযোগ, জ্ঞানযোগ, ভাববার কথা, পরিব্রাজক, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ইত্যাদি।
তাছাড়া, তিনি লিখে গেছেন অনেক গান। তার বিখ্যাত দুটি গান হল ‘খণ্ডন-ভব-বন্ধন’ ও ‘নাহি সূর্য নাহি জ্যোতি’।
তার বিখ্যাত উক্তি ছিল, “ওঠো, জাগো, লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত থেমো না”।