সত্যি বলতে, ‘পদ্মগোখরো’ গল্পটি প্রথম বার পড়ে কিছুই বুঝতে পারিনি। কী তার মূলভাব, কী তার অর্থ। পরে আরও একবার পড়ি। মানুষ লোভের কারণে নিজ মেয়ে-জামাইকেও ছাড় দেয় না। আর মায়ের ভালোবাসা ও মাতৃত্বের গভীর আকাঙ্ক্ষা এই গল্পের একটা মূল বিষয়।
Published : 22 May 2024, 06:04 PM
আমি বই পড়ে অবসর কাটাতে পছন্দ করি। কিছু দিন আগে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাই। হাতে ছিল খণ্ড অবসর। তাই সময়টা উপভোগ্য করতে আমি কয়েকটা বই বেছে নিই। তার মধ্যে কাজী নজরুল ইসলামের ছোট গল্পের বই ‘শিউলিমালা’ ছিল।
আমার হাতে বইটি দেখে আব্বু বললেন, ‘পড়, ভালো বই।’
আমি কোনো বই হাতে নিলে একেবারে পড়ে ফেলতে পারি। বিকেল থেকে নজরুলের শিউলিমালা পড়তে শুরু করি। রাত একটায় বইটি পড়া শেষ হয়।
বইটিতে চারটি গল্প আছে। গল্পগুলো হলো পদ্মগোখরো, জিনের বাদশাহ, অগ্নিগিরি ও শিউলিমালা।
প্রথম গল্প পদ্মগোখরো লেখা হয়েছে সাধু ভাষায় আর বাকি তিনটি গল্প চলিত ভাষায় লেখা।
সত্যি বলতে, ‘পদ্মগোখরো’ গল্পটি প্রথম বার পড়ে কিছুই বুঝতে পারিনি। কী তার মূলভাব, কী তার অর্থ। পরে আরও একবার পড়ি। মানুষ লোভের কারণে নিজ মেয়ে-জামাইকেও ছাড় দেয় না। আর মায়ের ভালোবাসা ও মাতৃত্বের গভীর আকাঙ্ক্ষা এই গল্পের একটা মূল বিষয়।
‘জিনের বাদশা’ গল্পটি খুবই চমৎকার। এই গল্পের প্রথম অংশটা আমাকে অনেক হাসায়। যেখানে গ্রামের বাউণ্ডুলের ছেলেদের দলনেতা আল্লারাখা। সে জিনের বাদশা সেজে চাঁন ভানু নামের এক মেয়ের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়। এদিকে আরেক গ্রামের ছেরাজ হালদারের সঙ্গে চাঁনের বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। চাঁন ভানু আর আল্লারাখার প্রেম কি পূর্ণতা পেয়েছিল সে গল্পে?
‘অগ্নিগিরি’ একটি প্রেমের গল্প। এ গল্পের স্থান, কাল ও ভাষা ময়মনসিংহের ত্রিশালকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে। নায়িকা নুরজাহানের ‘লজিং মাস্টার’ (গৃহশিক্ষক) ত্রিশাল মাদরাসার ছাত্র সবুর।
বইটির শেষ গল্প ‘শিউলিমালা’। এই গল্পের নামেই বইয়ের নামকরণ করা হয়। গল্পের নায়ক আজহার তার প্রিয়তমা শিউলির স্মরণে প্রতি বছর শরতের শেষে শিউলি ফুলের মালা জলে ভাসিয়ে দেয়। দাবা খেলাকে কেন্দ্র করে তাদের পরিচয় যাকে ঠিক প্রেম বলা যায় না।
কাজী নজরুলের এই গল্পগ্রন্থটি সব বয়সী পাঠকের জন্য সুখপাঠ্য হতে পারে বলে আমার মনে হয়।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৬। জেলা: ঢাকা।