
মেয়েদের খেলাধুলায় অনেক অভিভাবকই বাধা হয়ে দাঁড়ালেও মায়ের অনুপ্রেরণাতেই ফুটবল খেলা শেখে রংপুরের সদ্যপুস্করনী গ্রামের শিশু অনন্যা আক্তার।
রংপুর সদর উপজেলার পালিচড়া স্টেডিয়ামে দেখা মেলে ১২ বছর বয়সী ফুটবলার অনন্যা আক্তারের সঙ্গে।
কথা বলে জানা যায়, নয়াপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে সে। পড়াশোনার পাশাপাশি সদ্যপুস্করনী যুব স্পোর্টিং ক্লাবে ফুটবল খেলে অনন্যা। তার স্বপ্ন অনেক বড় ফুটবলার হওয়ার, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলতে চায় সে।
মাদকাসক্ত বাবার উদাসীনতায় সংসারে যখন টালমাটাল অবস্থা তখনও শুধু মায়ের অনুপ্রেরণায় খেলে যাচ্ছে সে।
কথায় কথায় সে জানায়, টেলিভিশনে নারীদের ফুটবল খেলা দেখে এর প্রতি আগ্রহ জাগে তার। এক বছর ধরে এখানে খেলছে সে।
খেলার প্রতি অসীম আগ্রহ দেখে সদ্যপুস্করনী যুব স্পোর্টিং ক্লাবের কোচ মিলন মিয়া তাকে নিজ উদ্যোগে স্কুলে ভর্তি করে দেন এবং খেলাধুলার দায়ভারও নেন।
হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে কথোপকথনে অনন্যা বলে, "আমার খেলার প্রতি আগ্রহ অনেক। এই আগ্রহ দেখে আমার মা আমাকে স্টেডিয়ামে পাঠায়। আমার বাসা থেকে স্টেডিয়াম দূর হয়, এ জন্য আমাদের ক্লাবের কোচ আমাকে এখানকার একটি স্কুলে ভর্তি করে দেয় ও থাকার ব্যবস্থা করে দেয়।”
ফুটবল নিয়ে স্বপ্ন দেখছে জানিয়ে সে বলে, “আমার স্বপ্ন অনেক বড় ফুটবলার হওয়ার। আমার বড় আপুরা ইন্ডিয়ায় যেয়ে ফুটবল খেলে জিতে এসেছে। আমিও তাদের মতো খেলতে চাই।"
মাঠে খেলতে গিয়ে কোনো বাধার মুখে পড়তে হয় কিনা জানতে চাইলে অনন্যা বলে, "অনেকেই অনেক কথা বলে। মেয়েদের ফুটবল খেলাটা ভালো চোখে দেখে না। অনেকেই বলে ফুটবল খেললে জান্নাতে যেতে পারবে না। আরও বিভিন্ন কথা বলে। কিন্তু আমার মা এ কথাগুলোতে কান দেয় না, আমিও তাদের কথায় কান দেই না। আমি খেলে আমার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই।"
অনন্যার মতো আরও অনেক নারী ফুটবলার বেড়ে উঠছে এবং উঠেছে রংপুরের এই পালিচড়া অঞ্চল থেকে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৪। জেলা: রংপুর।