কুড়িগ্রামে ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হলো হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী মই খেলা।
কুড়িগ্রাম জেলা সদরের ঘোগাদহ ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে এ খেলা অনুষ্ঠিত হয়। হারিয়ে যাওয়া এ খেলা দেখতে জেলার দূর দূরান্ত থেকে নানা বয়সের মানুষ ভিড় করে।
স্থানীয়রা জানান, আগে প্রতি বছর বাংলা পৌষ মাসের শেষের দিকে কিংবা মাঘ মাসের শুরুতে যখন ফসলি জমির মাটি শুকনো থাকত তখন এই মই খেলা নিয়মিত অনুষ্ঠিত হতো।
এ খেলায় প্রতিটি বড় মইয়ে চারটি গরু বাঁধা থাকে। প্রথমে দুইটি প্রতিযোগী দল মাঠের এক প্রান্ত থেকে দৌড় শুরু করে। মাঠের অপর প্রান্তে সবার আগে যে পৌঁছুতে পারে তিনিই জয়ী হন।
দুই দিনব্যাপী এ খেলায় জামালপুর জেলা থেকে আসা চারটি দল অংশগ্রহণ করে। বিজয়ী দলকে প্রথম পুরস্কার হিসেবে দেয়া হয় একটি গরু, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয় একটি করে খাসি এবং প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীদের জন্য ছিল সান্ত্বনা পুরষ্কার।
৩৫ বছর পর এ খেলা উপভোগ করতে পেরে খুশি স্থানীয়রা । স্থানীয় ব্যবসায়ী জহুর আলী বলেন, “গ্রাম বাংলার এ ঐতিহ্য একেবারে হারিয়ে গিয়েছিল। পুনরায় ৩৫ বছর পর আমাদের ইউনিয়নে খেলাটি চালু হওয়ায় আমরা বেশ আনন্দিত।”
মারুফ হাসান নামে এক দর্শনার্থী বলেন, “আগে আমাদের জেলার নাগেশ্বরী ও ভূরুঙ্গামারীতে এসব খেলা হতো । দিন দিন আধুনিক সভ্যতায় গ্রাম বাংলার এ ঐতিহ্যগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। সেদিক থেকে নতুন প্রজন্মের সামনে এসব ঐতিহ্য তুলে ধরতে এমন আয়োজন প্রয়োজন।”
এ বিষয়ে ঘোগাদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মালেক হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আমাদের এ ঐতিহ্যবাহী খেলাটি বন্ধ ছিল। বর্তমানে আধুনিক সভ্যতার কারণে এবং নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের উর্ধ্বগতির কারণে মানুষ তার শখের এসব খেলাকে ভুলে যাচ্ছে। আমার এলাকার মানুষদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা এই ঐতিহ্যবাহী খেলাটিকে পুনরায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করলাম।”
প্রতিবেদকের বয়স: ১৪। জেলা: কুড়িগ্রাম।