দফায় দফায় নানা বিধিনিষেধ আসছে। এদিকে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। বন্ধুদের সাথে দেখা হয় না, আড্ডা দেওয়া যায় না আর সেই জায়গাটা দখল করে নিচ্ছে অনলাইন গেইম।
আমার কাছে মনে হয় অনেক শিশু এটাতে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। সব কাজ ফেলে যখন গেইম নিয়েই শিশুরা ব্যস্ত থাকছে তখন আসক্তি শব্দটা ব্যবহার করাই যায়।
আজ আমার পরিচিত এক শিশুর কথা সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করতে চাই। তার বাবা ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। লকডাউনে নানা কষ্ট আর লড়াই করে তাকে চলতে হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতেও ছেলেকে তিনি অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়ার জন্য একটা স্মার্টফোন কিনে দিয়েছেন।
ওই ফোন ঘিরেই শুরু হয় তার দিনরাত্রি। সে এমন একটি গেইম খেলে যেখানে পোশাক ও অস্ত্র কিনতে বাস্তবেই টাকা দরকার হয়। তাছাড়া ইন্টারনেট খরচ তো আছেই।
সে তার বাবার কাছে একদিন এক হাজার টাকা দাবি করে। এমন একটা পরিস্থিতিতে এত টাকা তার বাবার জন্য জোগাড় করা বেশ কষ্টসাধ্য। তাই তিনি দিতে পারবেন না বলে জানান। এরপর বাবার সঙ্গে তার মনোমালিন্য শুরু হয়। এদিকে তার মায়েরও অভিমান হয় বাবার উপর। তিনি ভাবেন ছেলে অনলাইনে দিনভর পড়াশোনা করে কিন্তু তারা ছেলের জন্য কিছু টাকা জোগাড় করতে পারলেন না। এদিকে ছেলে জেদ করে বসে আছে, ওদিকে বাবা-মায়ের হতাশা কেন টাকা নেই এটা নিয়ে।
এটা দেখার পর আমার মনে হয়েছে এমন গল্প হয়ত এই একটিই নয়। অনেক পরিবার আজ এমন চাপের মুখোমুখি। চাহিদা শিশুদের থাকবেই। শিশুদের দাবি, আবদার তো বাবা-মায়ের কাছেই থাকে। আমি চাই শিশুরা সুস্থ ধারার বিনোদন আর সৃজনশীল কাজের সঙ্গে যুক্ত হোক। যাতে কোনটা ভুল, কোনটা ঠিক তারা বুঝতে পারে।