সেই ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় আবার কঠোর লকডাউনে পথ বেছে নিতে হচ্ছে। তবে এতে বেশি চিন্তিত খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর বাজারে ঘুরে ঘুরে বাঁশের তৈরি কুলা বিক্রি করেন সুকুমার চন্দ্র। হাতে তৈরি কুলা বিক্রি করে চালান পাঁচ সদস্যের একটি পরিবার।
তিনি বলেন, “কুলা বিক্রির টাকায় টেনেটুনে সংসার চালাই। গত লকডাউনে অনেক কষ্ট করেছি। জমানো টাকা আর ঋণ করে চলেছি। এবার কী করব? পাঁচ জন মানুষ নিয়ে আমার সংসার, চলবে কেমনে?”
শারিরীক প্রতিবন্ধী রনি মিয়া এই বাজারে কিছুদিন হলো ছোট একটি দোকান খুলে বসেছেন। সদ্য আত্মনির্ভরশীল হওয়া মানুষটির কপালেও চিন্তার ভাঁজ।
তিনি বলেন, “আমি লকডাউনের বিরুদ্ধে। সরকার ঘোষণা দিয়েই শ্যাষ, কিন্তু তারা কি আমাদের মতো মানুষের খোঁজ রাখবে?”
কুড়িগ্রাম থেকে কালিয়াকৈরে এসে ভাড়া নিয়ে রিকশা চালান আলাল হোসেন। দিন শেষে রিকশা মালিককে তিনশ টাকা দিয়ে যা থাকে তাই দিয়ে চলে সংসার। তিনি বলেন, “বাড়িতে বৃদ্ধ মা-বাবা তাদের খাবার, ঔষুধ খরচ সব চলে আমার টাকায়। দ্যাশের বাড়িতে কামও নাই, রিকশা চালাই। গত লকডাউনে কোনো রকম বেঁচে ছিলাম। এইবার কী করুম বুঝতেছি না।”
সারাদিন ঘুরে ঘুরে ঝালমুড়ি বিক্রি করেন আলী হোসেন নামের আরেক ব্যক্তি। বাড়ি বগুড়া অবে পরিবার নিয়ে থাকেন গাজীপুর।
স্কুল-কলেজ বন্ধ তাই আগের মতো আয় হয় না বলে জানালেন তিনি। তিনি বলেন, “এখন লকডাউন দিলে হয়তো না খেয়ে মরে যাব। আমরা তো এখানকার ভোটারও না যে আমাদের সরকার খাবার দিবে। গাড়ি বন্ধ বাড়িতেও যেতে পারছি না। অনেক টাকা ভাড়া লাগে।”