১৮ বছর বয়স দেখিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও স্বপ্না বেগমের মেয়েকে পুলিশ রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে বলে জানিয়েছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জ্যেষ্ঠ আদালত প্রতিবেদক প্রকাশ বিশ্বাস।
(শিশু অধিকার সনদের অঙ্গীকার মাথায় রেখে হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম শিশুটির নাম ও চেহারা প্রকাশ করলো না।)
এর আগে নিহত পুলিশ কর্মকর্তার ভাই মশিহুর রহমানের করা মামলার এজাহারের বর্ণনায় তার বয়স ১৭ বছর বলা হয়।
মেয়েটির স্কুল অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের স্কুলের ভর্তি ফর্মে ওর জন্ম তারিখ ১৭ অগাস্ট ১৯৯৬ লেখা রয়েছে।
এ হিসেবে বাবা-মার হত্যাকাণ্ডের দিন তার বয়স ১৭ বছর পুরো হয়নি।
এ বিষয়ে ইউনিসেফের শিশু অধিকার রক্ষা বিশেষজ্ঞ শাবনাজ জাহেরীন বলেন, “গত জুনে পাস হওয়া শিশু আইন ২০১৩-এ ১৮ বছর বয়সের নিচে সবাই শিশু। মেয়েটির বয়স ১৮ না হয়ে থাকলে তাকে পুলিশ রিমান্ডে কিভাবে নেওয়া যায় তা আমাদের দেখার বিষয়।”
বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলে পুলিশের সাড়া পাওয়া যায়নি।
প্রকাশ বিশ্বাস জানান, আইনে অভিযুক্ত শিশুর ট্রায়াল শিশু আদালতে করার নির্দেশনা রয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার চামেলীবাগের একটি ভবনের ফ্ল্যাটে মাহফুজুর রহমান ও স্বপ্না বেগমের ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া যায়। দুই বাচ্চা ও আরেক গৃহকর্মীকে নিয়ে তারা সেখানে থাকতেন।
অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ও লেভেলের ছাত্রী মেয়েটি বৃহস্পতিবার সকালে সাত বছর বয়সী ছোট ভাই ও গৃহকর্মীকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় বলে ওই বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক জানান। তারপর থেকে মেয়েটির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
নিহতদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কথা বলে পুলিশের সন্দেহ হয়, মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদে এই হত্যাকাণ্ডের কূল-কিনারা করা যাবে।
শনিবার মেয়েটি নিজেই পুলিশের কাছে ধরা দেওয়ার পর তাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে আটকও করে তারা।
সেদিন ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, মেয়েটির বন্ধু ও গৃহকর্মীকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া আরো তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এনেছেন তারা।
“প্রাথমিকভাবে যে তথ্য আমরা পেয়েছি, তাতে মনে হয়েছে নিহত দম্পতির মেয়ে এই হত্যাকাণ্ডে কিছুটা জড়িত।”
হত্যাকাণ্ডের পর খোয়া যাওয়া কিছু গহনাও মেয়েটির কাছে পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।
জোড়াখুনে জড়িত থাকার অভিযোগে রোববার মেয়েটিকে পাঁচ দিনের পুলিশী রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেয় আদালত।