কর্মক্ষেত্রে ডে কেয়ার সেন্টার পর্যাপ্ত নয়

রাজধানীতে কর্মজীবী নারীরা তাদের শিশুদের জন্য কর্মক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা দাবি করেছেন।
কর্মক্ষেত্রে ডে কেয়ার সেন্টার পর্যাপ্ত নয়

পোশাক কারখানায় কর্মরত আলেয়া বেগম হ্যালোকে বলেন, ‘১৬ মাসের পোলা রাইখা কামে আইতে হয়। কামে মন বসাইতে পারি না। অফিসে বাচ্চা নিয়া রাখনের ব্যবস্থা থাকন জরুরি।’    

শিশু অধিকার কর্মী ওয়াহিদা বানু স্বপ্না হ্যালোকে জানান, পর্যাপ্ত ডে কেয়ার সেন্টারের অভাব থাকায় কর্মজীবী মায়েরা সন্তানের যত্ন নিতে পারছেন না।

তারা সন্তানদের জন্য দুশ্চিন্তায় কাজে মনযোগ দিতে পারছেন না। কর্মজীবী নারীর জন্য সব প্রতিষ্ঠানে ডে কেয়ার সেন্টারের প্রত্যাশা মায়েদের, জানান তিনি।

এই বিষয়ে কথা হয় বিভিন্ন নারী সংগঠনের নেত্রী ও কর্মজীবী নারীদের সঙ্গে। তাদের মতে সরকারি, বেসরকারি উদ্যোগে রাজধানীতে বেশ কয়েকটি ডে কেয়ার সেন্টার থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।

বাংলাদেশের শ্রম আইনে বলা হচ্ছে, যে প্রতিষ্ঠানে ৪০জনের  বেশি নারী আছেন, সেখানে ছয় বছর বয়স পর্যন্ত শিশু সন্তানের জন্য শিশুকক্ষ বা শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের জায়গা থাকতে হবে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম হ্যালোকে জানান, একটা প্রতিষ্ঠানে ডে কেয়ার সেন্টার থাকা খুব জরুরি। অনেক প্রতিষ্ঠানে বেশিরভাগ নারী কর্মীদের বাচ্চার বয়স পাঁচ বছরের নিচে।  

‘সময়মত তাদের খাবার ও মাতৃদুগ্ধ দরকার। তাই তাদের কথা বিবেচনা করে ডে কেয়ার সেন্টার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এতে কর্মজীবী মায়েরা তাদের বাচ্চা নিরাপদ স্থানে রেখে নিশ্চন্তে কর্মক্ষেত্রে মনোনিবেশ করতে পারবেন’, বলেন তিনি।    

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে  মন্ত্রণালয়ের অধীনে রাজধানীতে ৪৩ টি ডে কেয়ার সেন্টারে প্রায় তিন হাজার তিনশ শিশুকে লালন পালনের ব্যবস্থা রয়েছে।

রাজধানীতে বর্তমানে  অবস্থিত ডে কেয়ারগুলো পর্যাপ্ত না হওয়ায় আরও বেশ কয়েকটি ডে কেয়ার স্থাপনের পরিকল্পনা অনুমোদনের অপেক্ষা রয়েছে। সেগুলো অনুমোদন পেয়ে গেলে এ সমস্যা কিছুটা হলেও সমধান মিলবে বলে আশা করেন তিনি।

রাজধানীতে কর্মজীবী নারীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে শুরু করে সরকারি, বেসরকারি চাকরি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসা এবং শিক্ষকতাসহ বিভিন্ন পেশা ও উৎপাদনশীল খাতে কর্মজীবী নারীর অংশ গ্রহণ ক্রমেই বেড়ে চলেছে কিন্তু কর্ম পরিবেশ মায়ের উদবেগ কমাতে পারছে না।

কিন্তু এ আইন বাস্তবায়নে কার্যকরী তেমন কোনো উদ্যোগ নাই। ফলে  সন্তান পালনের জন্য বাধ্য হয়ে অনেক কর্মজীবী নারী কাজ ছেড়ে  দিতে বাধ্য হচ্ছেন।      

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সংবিধান অনুযায়ী অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান বা অফিস তাদের কার্যক্রম পরিচালনা না করায় কর্মজীবী নারীরা এ ধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। যদি কর্মক্ষেত্রে নারীদের জন্য ডে কেয়ার থাকে তবেই কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি হবে।  

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com