সাক্ষাতকারে যা বলি, প্রিন্ট হয় তার উল্টো: আহসান হাবিব

সম্প্রতি পিরোজপুর শহরের গোপালকৃষ্ণ টাউন ক্লাব মাঠ স্বাধীনতা মঞ্চে আন্তঃস্কুল বিজ্ঞান ক্লাব আয়োজিত ‘শিক্ষার্থী সমাবেশ ও শহীদ পিতার স্মরণে’ অনুষ্ঠানে হ্যালোর সঙ্গে কথা হয় কার্টুনিস্ট ও রম্য লেখক আহসান হাবিবের।

হ্যালো: কেমন আছেন?

আহসান হাবিব: হ্যাঁ, ভালো।

হ্যালো: পিরোজপুর এসে কেমন লাগছে?

আহসান হাবিব: শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত স্থান। এসে ভালোই লাগছে।

হ্যালো: সাক্ষাতকার দিতে কেমন লাগে আপনার?

আহসান হাবিব: সাক্ষাতকার দিতে আমার ভালো লাগে না। আমি সাক্ষাতকারে যা বলি প্রিন্ট হওয়ার পর দেখি অন্য কথা। ওখান থেকে উল্টা পাল্টা করে দেয়। তাই সাক্ষাতকার দিতে আমি আগ্রহী না।

হ্যালো: আমি একটু কার্টুন নিয়ে কথা বলতে চাই। একটি সাধারণ ড্রয়িং আর একটি কার্টুন চিত্রের মধ্যে তফাৎ কী?

আহসান হাবিব: সাধারণ ড্রয়িং হলো একটা ইলাস্ট্রেশন। আর কার্টুন চিত্র হলো একটা মেসেজ। হয় না হিউমারের ভিতর থেকে একটা মেসেজ? কার্টুন হলো সে রকম।

হ্যালো: কার্টুনিস্ট হওয়ার ইচ্ছা হলো কেন?

আহসান হাবিব: আমি ছোটবেলা থেকেই কার্টুন আঁকি। ১৯৭৮ সাল থেকে আমি  পেশাদারিত্বের সঙ্গে কার্টুন আঁকা শুরু করি। আসলে আমার পরিবারের সবাই প্রায় ছবি আঁকত। তাই দেখেই কার্টুন আঁকা শুরু করি।

হ্যালো: আপনার ছোটবেলা সম্পর্কে কিছু জানতে চাই।

আহসান হাবিব: আমার বাবার তো বদলির চাকরি ছিল। আমি আটটি স্কুলে পড়েছি। তারপর মেট্রিক পাশ করেছি ঢাকার মোহাম্মদপুরের একটি স্কুল থেকে। আমি জীবনটা মফস্বলে কাটিয়েছি। মফস্বলের জীবন খুব ভালো লেগেছে। বিশেষ করে পিরোজপুরে সুন্দর স্মৃতি ছিল আমাদের।

হ্যালো: আমি শুনেছি আপনি শব্দের ভেতরে রং দেখতে পান। এ বিষয়ে যদি কিছু বলতেন।

আহসান হাবিব: মানুষের সাউন্ডের নার্ভ এবং চোখের নার্ভ যখন ওভারলেপিং হয় তখন মানুষ সাউন্ডটাকে কালারে দেখতে পায়। খুব কম লোকের ক্ষেত্রে এমন হয়।

হ্যালো: চিকিৎসাবিজ্ঞানে এ বিষয়ে কি কোনো ব্যাখ্যা আছে ?

আহসান হাবিব: না। আসলে এটাতো কোনো রোগ নয়। এটা আসলে একটা মজার ব্যাপার বলা যায়। আমার ক্ষেত্রে হয়েছে তাই আমি হয়তো একটু আলাদা।

হ্যালো: আচ্ছা হৃদয় শব্দের রঙ কী?

আহসান হাবিব: হৃদয় হলো মেরুন কালার।

হ্যালো: আপনার বড় ভাই হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে কিছু শুনতে চাই।

আহসান হাবিব: তার সম্পর্কে আসলে কিছু বলার নাই। তাকে খুব মিস করি। আরও কিছুদিন বেঁচে থাকা উচিৎ ছিল তার। আর একটা ব্যাপার হলো তার সম্পর্কে তিনি নিজেই অনেক কিছু লিখে গেছেন। এছাড়া আমার ভাই জাফর ইকবাল এমনকি আমিও লিখেছি। তার লেখালেখির একটা বড় অংশই হয়েছে পিরোজপুরে।

হ্যালো: আপনার বাবার শহীদ হওয়ার সময়ের কথা মনে আছে?

আহসান হাবিব: আমার বাবা তখন পিরোজপুর মহকুমা পুলিশ প্রধান ছিল। ৫ মে তাকে পাকিস্তানিরা মেরে লাশ ভাসিয়ে দেয়। শেষবারের মতো তাকে দেখার সুযোগও পায়নি আমি। আমরা তখন দুর্গাপুরের বাবলায় ছিলাম। প্রথমে জানতেও পারিনি তার মৃত্যু সংবাদ। পরে জানতে পারি তাকে এক কৃষক এখানে মাটি চাপা দিয়েছেন।

হ্যালো: আপনার হাতে আমার একটা কার্টুন এঁকে দেবেন?

আহসান হাবিব : একটু হেসে। (আমাকে একটা কার্টুন এঁকে দেন তিনি)।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com