কুড়িগ্রাম জেলার বাল্যবিয়ের পরিস্থিতি নিয়ে হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
হ্যালো: কুড়িগ্রামে বাল্যবিয়ে বন্ধে সচেতনতা তৈরির ক্ষেত্রে প্রশাসন নিয়মিত কোন ধরনের কাজ করছে?
রাসেদুল হাসান: আমরা উপজেলা পর্যায় থেকে শুরু করে ইউনিয়নেও বাল্যবিবাহ নিরোধ কমিটি করে দিয়েছি। তারা নিয়মিত মিটিং করে জনগণকে সচেতন করে থাকে। পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে উঠান বৈঠক করছি। এছাড়া ইমাম, পুরোহিত ও শিক্ষকদের নিয়ে আমরা সেমিনার করেছি। প্রতি মাসে ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে সমাবেশ করি। এছাড়াও তথ্য আপা যে প্রকল্প আছে সেটার উঠান বৈঠক ও আমাদের বিভিন্ন দপ্তরগুলোর ট্রেনিংয়ে বাল্যবিয়ে বন্ধের বিষয়টি তুলে ধরি । যাতে সামাজিকভাবে আমরা বাল্যবিয়েটা রোধ করতে পারি।
হ্যালো: ঠিক কী কী কারণে বাল্যবিয়ে বেশি হয় বলে আপনি মনে করেন?
রাসেদুল হাসান: আসলে বাল্যবিয়ের তো অনেকগুলো কারণ রয়েছে। প্রথমত মেয়েদের মধ্যে সচেতনতার অভাব। তাদের মধ্যে বাল্যবিয়ে নিয়ে সচেতনতা নেই। দ্বিতীয়ত ঝরে পড়া। তারা অল্প পড়াশোনা করেই বাদ দিচ্ছে। এ কারণে তারা বাল্যবিয়ের শিকার হচ্ছে।
হ্যালো: আর্থিক অসচ্ছলতার জন্য বাল্যবিয়ে বেশি হয়। কিন্তু কিশোরীর সামাজিক নিরাপত্তা না থাকাটাও অনেক বড় কারণ কিনা?
রাসেদুল হাসান: আর্থিক অসচ্ছলতার জন্য বাল্যবিয়ে বেড়ে যাচ্ছে এটা আমি মনে করি না । কারণ অনেক অসচ্ছল পরিবারের মেয়েরা ভালো পড়াশোনা করে অনেক ভালো ভালো পজিশনে চলে যাচ্ছে। অসচেতনতাই বাল্যবিয়ের জন্য দায়ী।
হ্যালো: কুড়িগ্রাম জেলায় বাল্যবিয়ে হওয়ার সংখ্যা কেমন? এই পর্যন্ত কতগুলো বাল্যবিয়ে বন্ধ করেছেন? বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে গেলে এলাকাবাসীর প্রতিক্রিয়া কেমন হয়?
রাসেদুল হাসান: বাল্যবিয়ে নিয়ে মানুষদের মধ্যে একটা মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। বিয়ের আয়োজন করে ফেলার পর বিয়ে ভেঙে গেলে নেগেটিভ ও পজেটিভ দুটোই প্রতিক্রিয়া দেখান। আমরা যখন বিয়েটা বন্ধ করি শুরুতে নেগেটিভ প্রতিক্রিয়া দেখান। কিন্তু আমরা যখন তাদের বোঝাই তখন তারা বোঝেন যে,বাল্যবিয়ের কারণে একটি মেয়ের কী কী সমস্যা হতে পারে। তখন তারা বিষয়টিকে পজেটিভলি নেন।
হ্যালো: ইতোমধ্যে বাল্যবিয়ে হয়ে গেছে এমন কিশোরীরা যাতে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে এ ব্যাপারে প্রশাসনের ভূমিকা কেমন হতে পারে? আদৌ এমন পদক্ষেপ নেওয়া আছে কিনা?
রাসেদুল হাসান: ইতিমধ্যে যাদের বাল্যবিয়ে হয়ে গেছে সমাজ সেবা অফিস তাদের একটি ডাটাবেজ তৈরি করে।
যাতে তাদের পড়াশোনা বন্ধ না হয় সে বিষয়ে খোঁজ রাখা হয় নিয়মিত। এছাড়া তাদের বিভিন্ন সাপোর্ট দেওয়াসহ ওয়ার্ড কমিটির মাধ্যমে মনিটরিং করি এবং এনজিওগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে থাকি।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৬। জেলা: কুড়িগ্রাম।