'আমি নয় নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করি। আমার বাহিনী তখন দেশের ভেতরেই ট্রেনিং নেয়। আমরা ভারতে যাইনি।'
Published : 21 Mar 2024, 01:51 PM
মুক্তিযুদ্ধের সময় মো. হাকিম মোল্লার বয়স ছিল সতের বা আঠার। রেডিওতে স্বাধীনতার ঘোষণা শুনেই যুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। দেশের ভেতরে ট্রেনিং নিয়ে যুদ্ধ করেন নয় নম্বর সেক্টরে। পাক ও রাজাকার বাহিনীর সঙ্গে বহু সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানান সেই সব দিনের কথা।
হ্যালো: মুক্তিযুদ্ধের সময় আপনার বয়স কত ছিল?
মো. হাকিম মোল্লা: মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স সতের থেকে আঠার বছর ছিল, আনুমানিক।
হ্যালো:বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার খবর আপনি কীভাবে পান?
মো. হাকিম মোল্লা: আমি রেডিও ও টেলিভিশনের মাধ্যমে স্বাধীনতা ঘোষণার সংবাদ পাই। এছাড়া সে সময় বাগেরহাটে যারা রাজনীতি করতেন, তাদের সঙ্গে আমার উঠা-বসা ছিল। তারাও আমাকে এই বিষয়ে জানান।
হ্যালো: স্বাধীনতা ঘোষণা শোনার পর আপনি কী সিদ্ধান্ত নেন?
মো. হাকিম মোল্লা: তখন আমি মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।
হ্যালো: আপনি কত নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেন এবং আপনি কি ট্রেনিং নিতে ভারতে গিয়েছিলেন?
মো. হাকিম মোল্লা: আমি নয় নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করি। আমার বাহিনী তখন দেশের ভেতরেই ট্রেনিং নেয়। আমরা ভারতে যাইনি।
হ্যালো: যুদ্ধের জন্য অস্ত্র কোথায় পেতেন?
মো. হাকিম মোল্লা: আমরা যশোর থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করি। ভারত থেকেও অস্ত্র পেয়েছি। লড়াইয়ের পর পাক সেনা ও রাজাকারদের ব্যবহৃত অস্ত্রও সংগ্রহ করতাম।
হ্যালো: যুদ্ধের কিছু স্মৃতি আমাদের বলেন।
মো. হাকিম মোল্লা: বাগেরহাটে রফিকুল ইসলাম খোকন আমাদের কমান্ডার ছিলেন। তার নেতৃত্বে আমরা যুদ্ধ করি। আমরা উত্তরাঞ্চল মুক্ত রাখতাম।
বাগেরহাটে প্রতিটা দিনই আল বদর, আল শামস বাহিনীর সঙ্গে আমাদের যুদ্ধ হতো। এই যুদ্ধ বেশির ভাগ সময়ে হতো বাবুর হাট ও বিষ্ণুপুরে। আমরা অনেক বেশি সম্মুখ যুদ্ধ করেছি।
হ্যালো: যুদ্ধের সময় আপনি কাউকে হারিয়েছেন?
মো. হাকিম মোল্লা: আমার অনেক সহযোদ্ধা যুদ্ধে মারা যান। আত্নীয়দের মধ্যেও মুক্তিযুদ্ধে শহীন হন কয়েক জন।
হ্যালো: আপনার মধ্যে কোনো ভয় কাজ করেনি সে সময়?
মো. হাকিম মোল্লা: মৃত্যুর ভয় তো সবার মাঝেই থাকে। তবে দেশপ্রেম থাকলে মৃত্যু ভয় কাজ করে না।
হ্যালো: আপনার সঙ্গে কি কখনো বঙ্গবন্ধুর দেখা হয়েছিল?
মো. হাকিম মোল্লা: বঙ্গবন্ধু একবার বাগেরহাটে মিটিংয়ে আসেন। তখন তাকে দেখেছি।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৩। জেলা: বাগেরহাট।