অন্য চোখে

'জীবনে ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ একটি অপরাধ'

হ্যা

গত বছর ঢাকা সফরের সময় তরুণদের তিনি বলেন, সবগুলো স্বপ্ন অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত থামা যাবে না।

“স্বপ্নকে হতে হবে বিশাল। জীবনে ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ একটি অপরাধ।”

এই বিজ্ঞানী তরুণদের উৎসাহ দিয়ে বলেছেন, জীবনের লক্ষ্য অর্জনের পথে এগিয়ে যেতে যেতে বারবার সমস্যা আসবে, সংকট পথ আটকাবে। কিন্তু হৃদয়ে রাখতে হবে একটি সংকল্প।

তিনি বলেছেন ,“আমি সংকটজয়ী হব, সব সমস্যা পেছনে ফেলে ছিনিয়ে নেব সাফল্য।”

জগতের মহান ব্যক্তিত্বদের পদচিহ্ন অনুসরণ করে তাদের জীবন থেকে অনুপ্রেরণা নিতেও তরুণদের উপদেশ দিয়েছেন এই বিজ্ঞানী।

স্বচ্ছলতার শৈশব ছিল না কালামের। খাবার জোটাতে আট বছর বয়সে তিনি খবরের কাগজও বিক্রি করতেন বলে বাংলাদেশের তরুণদের বলেছিলেন তিনি।

শৈশবে পারস্যের কবি জালালউদ্দিন রুমির একটি কবিতাই কালামের হৃদয়ে স্বপ্নের বীজ বুনে দিয়েছিল। এই কবিতাটি গত বছর ঢাকার তরুণদের আবৃত্তি করে শোনান তিনি।

“আমি সম্ভাবনা নিয়ে জন্মেছি। আমি জন্মেছি মঙ্গল আর বিশ্বাস নিয়ে। আমি এসেছি স্বপ্ন নিয়ে। মহৎ লক্ষ্য নিয়েই আমার জন্ম। হামাগুড়ির জীবন আমার জন্য নয়, কারণ আমি ডানা নিয়ে এসেছি। আমি উড়ব, উড়ব, আমি উড়বই।”

ভারতের এই সাবেক রাষ্ট্রপতি বিজ্ঞানী এপিজে আব্দুল কালাম ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ১৫ অক্টোবর ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির রামেশ্বরমের এক তামিল পরিবারে জন্ম নেন।

তার পিতা জয়নুল আবেদিন একজন নৌকার মালিক এবং মাতা আশিয়াম্মা একজন গৃহবধূ ছিলেন। খুব গরীব পরিবারের সন্তান হওয়ায় খুব অল্প বয়সেই তাকে জীবিকার প্রয়োজনে বিভিন্ন পেশায় কাজ করতে হয়েছিল।

ভারতের মানুষ তার নাম দিয়েছিলেন ‘মিসাইল ম্যান। তিনি ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘ভারত রত্ন', ‘পদ্মভূষণ' ও ‘পদ্মবিভূষণ' খেতাব পান।  

এক অনুষ্ঠানে এই বিজ্ঞানীর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কিসে তার আনন্দ?

 এপিজে কালাম সরল উত্তরে বলেছিলেন, শিক্ষকতা আর গবেষণায়।

সায়েন্টিফিক পথওয়েস টু আ ব্রাইটার ফিউচার (পুনরায় জ্বলে উঠুন : উজ্জ্বল ভবিষ্যত নির্মাণের বৈজ্ঞানিক উপায়) শীর্ষক গ্রন্থটিতে আবুল কালাম বলেছেন, ছোটবেলায় সমুদ্র সৈকতে পাখিদের ওড়াওড়ি দেখে আকৃষ্ট হতেন তিনি। তারপর বিমান ওড়া দেখে বিস্মিত হতেন। কিন্তু বিমান কীভাবে ওড়ে তা তিনি জানতেন না।

১০ বছর বয়সে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় তার স্কুলের বিজ্ঞান শিক্ষক সিভা সুব্রামানিয়া পাখি কীভাবে ওড়ে সেই প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করেছিলেন। একই সঙ্গে বিমান উড়ার পদ্ধতিও জেনেছিলেন শিক্ষকের কাছ থেকে।

তখনই তিনি জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন।

গত ২৭ জুলাই ৮৪ বছর বয়সী তিনি ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় সেখানেই হঠাৎ ঢলে পড়ে যান।

পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কিছুক্ষণের মধ্যে ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআই দেশের সাবেক রাষ্ট্রপতির হার্ট অ্যাটাকের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।

SCROLL FOR NEXT