অন্য চোখে

বীরশ্রেষ্ঠদের জানি: মোহাম্মদ রুহুল আমিন (পর্ব :১)

হ্যা

১৯৭১ সালের মার্চে পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত বর্বরতম ঘটনার সময় রুহুল আমিন চট্টগ্রামে কর্মরত ছিলেন৷ চট্রগ্রাম নৌ-ঘাঁটিতে বসে শুনেছেন নির্দয়ভাবে তার স্বজন, পাড়া প্রতিবেশীদের হত্যার খবর।

তিনি বুঝতে পেরেছিলেন নৌ-ঘাঁটিতে বসে দেশের জন্য কিছু করা সম্ভব না। তাই তিনি সেখান থেকে পালানোর পরিকল্পনা করতে থাকেন।পরে সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন।

১৯৭১ সালে দেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে ২নং সেক্টরে যোগ দেন। সেখানে তিনি মেজর শফিউল্লাহ্র নেতৃত্বে সম্মুখ সমরে অংশ নেন।

১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রুহুল আমিন আগরতলায় যান। সেখানে 'বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী' গঠনের উদ্দেশে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। সাবেক নৌবাহিনীর সদস্যদের যারা বিভিন্ন সেক্টর ও সাব-সেক্টরে থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল তাদের একত্র করা হচ্ছিল। এরপর তিনি সেখান থেকে ভারতের কলকাতায় চলে আসেন। তৎকালীন ভারত সরকারের দেওয়া গানবোট 'পলাশ' এ ইঞ্জিনরুম আর্টিফিশার হিসাবে যোগ দেন।

১৯৭১ সালের ৬ডিসেম্বর মিত্রবাহিনীর সাথে তিনি যোগ দিয়ে ভারতের হলদিয়া নৌ-ঘাটি থেকে রওনা দেন।উদ্দেশ্য মংলা বন্দরে পাকিস্তানি নৌ-ঘাটি পিএনএস তিতুমীর দখল করার।

১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর খুলনার রূপসা উপজেলার বাগমারা গ্রামে রূপসা নদীতে নৌবাহিনীর জাহাজ 'পলাশ' নিয়ে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পর গোলার আঘাতে শহীদ হন ইঞ্জিনরুম আর্টিফিসার মোহাম্মদ রুহুল আমিন৷

২০০৩ সালে তার সমাধিস্থলে দেড় একর জমি জুড়ে প্রতিষ্ঠা হয় 'বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন সমাধি কমপ্লেক্স'। তার সম্মানে তার জন্মস্থান বাধপাচরা গ্রামের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় 'রুহুল আমিন নগর'। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যেগে প্রতিষ্ঠা পায় 'বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর।‘  

যুদ্ধে তার অসামান্য বীরত্বের জন্য তাকে ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়৷

SCROLL FOR NEXT