অন্য চোখে

‘আমি কোনো আগন্তুক নই’

হ্যা

উনিশ শতকের গোড়ার দিকে এই জানুয়ারি মাসেই তিনি জন্মেছিলেন। পিরোজপুরের শংকরপাশা গ্রামে এক দরিদ্র পরিবারে অনেকগুলো ভাইবোনের সাথে তিনি বেড়ে ওঠেন। ভাইবোনদের মাঝে তিনি ছিলেন বড়। শিক্ষা জীবনে তিনি ১৯৩৫ সালে পিরোজপুর গভর্নমেন্ট স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষা পাশ করার পর বরিশালের ব্রজমোহন কলেজে আইএ ক্লাসে ভর্তি হন। কিন্তু আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে লেখাপড়া ছেড়ে কাজের খোঁজে তখনকার রাজধানী কলকাতা চলে যান। সেখানেই সাংবাদিক হিসেবে তার কাজ শুরু করেন।

আধুনিক কাব্যধারার কবি ছিলেন তিনি। আর কাব্যচর্চার শুরু বাল্যকাল থেকেই। ১৯৩৩ সালে, সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় স্কুল ম্যাগাজিনে প্রথম লেখা একটি প্রবন্ধ ‘ধরম’ ছাপা হয়।   

১৯৩৪ সালে তার প্রথম কবিতা, ‘মায়ের কবর পাড়ে কিশোর’ ছাপা হয় পিরোজপুর গভর্নমেন্ট স্কুল ম্যাগাজিনে। তখন তিনি দশম শ্রেণির ছাত্র। পরে দেশ, মোহাম্মদী, বিচিত্রা নানান পত্রিকায় তার কবিতা প্রকাশিত হয়। আহসান হাবীবের প্রথম কবিতার বই, ‘রাত্রিশেষ’ প্রকাশিত হয় ১৯৪৭ সালে।

মধ্যবিত্তের সংকট ও যন্ত্রণা আহসান হাবীবের কবিতার মুখ্য বিষয়। সামাজিক বাস্তবতা, মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংগ্রামী চেতনা এবং সমকালিন যুগযন্ত্রণা তার কবিতায় ফুটে উঠেছে। তার ভাষা ও প্রকাশভঙ্গিতে আছে নাগরিক ছাপ।

তিনি আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্রের স্টাফ আর্টিস্ট হিসেবেও কাজ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ঢাকায় এসে তিনি বিভিন্ন সময়ে  আজাদ,  মোহাম্মদী, কৃষক, ইত্তেহাদ প্রভৃতি পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন।

১৯৫৭-৬৪ পর্যন্ত তিনি ফ্রাঙ্কলিন পাবলিকেশনস’র প্রোডাকশন অ্যাডভাইজার ছিলেন। পরে তিনি কিছুদিন দৈনিক পাকিস্তানে কাজ করেন এবং আমৃত্যু দৈনিক বাংলার সাহিত্য সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।  

সাহিত্যসাধনার  স্বীকৃতি হিসেবে ইউনেস্কো সাহিত্য পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, নাসিরউদ্দীন স্বর্ণপদক, একুশে পদক, আবুল মনসুর আহমদ স্মৃতি পুরস্কার এবং আবুল কালাম স্মৃতি পুরস্কার পান।

১৯৮৫ সালের ১০ জুলাই তিনি মারা যান।

SCROLL FOR NEXT