খবরাখবর

অনলাইন বিপদের মুখে দেশের ৩২ শতাংশ শিশু: ইউনিসেফ

হ্যা

সম্প্রতি ‘বাংলাদেশের শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা’ শীর্ষক একটি জরিপ পরিচালনা করেছে ইউনিসেফ।

হ্যালোতে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউনিসেফ জানায়, জরিপটিতে দশ থেকে ১৭ বছর বয়সী স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় পড়ুয়া এক হাজার ২৮১ শিশুকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

এতে দেখা গেছে তাদের মধ্যে ২৫ শতাংশ শিশুই ১১ বছরের কম বয়সে ইন্টারনেট জগতে প্রবেশ করেছে এবং ৯৪ শতাংশেরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট আছে। শিশুদের একটি বড় অংশ (৬৩ শতাংশ) নিজের ঘরে বসেই ইন্টারনেট ব্যবহার করে, যা ‘বেডরুম কালচার’ অর্থাৎ কম নজরদারির মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করে।

গবেষণায় আরও দেখা গেছে, ছেলেরা মেয়েদের চেয়ে বেশি ইন্টারনেট ব্যবহার করে। ছেলেরা ৬৩ শতাংশ ও মেয়েরা ৪৮ শতাংশ। শিশুরা ইন্টারনেটে সবচেয়ে বেশি যে দুটি কাজ করা হয় তা হচ্ছে, অনলাইন চ্যাটিং (বার্তা আদান-প্রদান) ও ভিডিও দেখা।

প্রতিদিন গড়ে ৩৩ শতাংশ সময় অনলাইন চ্যাটিং এবং ৩০ শতাংশ সময় ভিডিও দেখা হয়ে থাকে। ৭০ শতাংশ ছেলে ও ৪৪ শতাংশ মেয়ে অনলাইনে অপরিচিত মানুষের বন্ধুত্বের অনুরোধ গ্রহণ করে। এমনকি জরিপে অংশ নেওয়া ১৪ শতাংশ শিশু নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলে সেই অনলাইন ‘বন্ধুদের’ সঙ্গে সরাসরি দেখা করার কথাও স্বীকার করেছে। শুধু তাই নয় বিভিন্ন ধরনের সাইবার অপরাধের মধ্যে ধর্মীয় উস্কানি দেয়ার বিষয়টিও সমীক্ষায় উঠে এসেছে।

এতে অংশ নেওয়া ১০ শতাংশ শিশু ধর্মীয় উস্কানিমূলক বিষয়বস্তুর মুখোমুখি হওয়ার অভিযোগ করেছে। কিশোর বয়সীরা (১৬ থেকে ১৭ বছর) অন্য বয়সী শিশুদের তুলনায় অনেক বেশি এই ধরনের উস্কানিমূলক বিষয়বস্তুর সম্মুখীন হয়।

ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এডয়ার্ড বেগবেদার বলেন, “বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাপী শিশু ও তরুণ জনগোষ্ঠীর কথা আমরা শুনেছি এবং তারা যা বলছে তা পরিষ্কার। ইন্টারনেট একটি নির্দয় মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। এজন্য নিরাপদ ইন্টারনেট দিবসে ইউনিসেফ তরুণ জনগোষ্ঠীর নেতৃত্ব অনুসরণ করছে ও অনলাইনে তাদের প্রতি সদয় হতে সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।

“একইসঙ্গে সবার জন্য, বিশেষ করে শিশুদের জন্য ইন্টারনেটকে নিরাপদ একটি জায়গায় পরিণত করতে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণেরও আহ্বান জানাচ্ছে ইউনিসেফ।”

ইউনিসেফের মতে, অনলাইনে হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন ব্যাপক ক্ষতির কারণ হতে পারে। কারণ এটা দ্রুত অনেকের কাছে পৌঁছে যেতে পারে এবং অনলাইনে অনির্দিষ্টকাল ধরে এগুলো থেকে যেতে পারে।

অন্য শিক্ষার্থীদের তুলনায় যারা অনলাইনে ভয়ভীতির শিকার হয়, তাদের অ্যালকোহল ও মাদকে আসক্ত হওয়া ও স্কুল ফাঁকি দেওয়ার হার বেশি। এছাড়া তাদের পরীক্ষায় ফল খারাপ করা, আত্মসম্মান কমে যাওয়া ও স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দেওয়ার সমূহ আশঙ্কা থাকে। চরম পরিস্থিতিতে, অনলাইনে ভয়ভীতি প্রদর্শন এমনকি আত্মহত্যার দিকেও ঠেলে দিতে পারে বলে ওই জরিপে উঠে এসেছে।

SCROLL FOR NEXT