কথায় কথায়

'সবার মাঝেই প্রতিভা থাকে'

হ্যা

হ্যালো: কেমন আছেন?

জাফর ইকবাল: ভালো।

হ্যালো: পিরোজপুর এসে কেমন লাগছে?

জাফর ইকবাল: খুবই ভালো লাগছে।

হ্যালো: পিরোজপুরের সাথে আপনার সম্পর্ক তো অনেক দিনে।

জাফর ইকবাল: হ্যাঁ অবশ্যই। আমার বড় বোনের বিয়ে হয়েছে এখানে। এছাড়া আমি জীবনের কিছুটা সময়ও কাটিয়েছি। আমার বাবার কবর এখানে।

হ্যালো: বিদেশে ঘুরতে গিয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে কোনো অভিজ্ঞতা যদি বলতেন?

জাফর ইকবাল: অনেক দেশ আছে যেখানে আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের সংখ্যার চেয়ে ওদের জনসংখ্যা কম। এদেশের শিক্ষার্থীরা যদি ঠিকভাবে লেখাপড়া করে তবে কিছুদিনের মধ্যে বাংলাদেশ অনেকটা এগিয়ে যাবে। আরেকটা বিষয় হল এদেশে ছেলেমেয়ের বিভেদটা ভুলে মেয়েরা এগিয়ে আসছে লেখাপড়ায়। যেটি আমাদের জন্য একটা প্লাস পয়েন্ট। ভারত বাংলাদেশের থেকে অনেকটা উন্নত। অথচ সেখানে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের জন্য শৌচালয় নেই। অথচ বাংলাদেশ এদিক থেকে অনেকটা এগিয়ে।

হ্যালো: আমার এক বন্ধুর নাম শান্তু। ও ক্রিকেট খেলতে ভালোবাসে। সুযোগ পেলেই লেখাপড়া রেখে খেলার মাঠে ছুটে যায়। স্যার ওকে দিয়ে কি দেশের উন্নতি সম্ভব নয়?

জাফর ইকবাল : হ্যাঁ। এটা একটা ভালো পয়েন্ট। ও যদি খেলতে ভালোবাসে তবে ওকে শুধু খেলাধুলার দিকে আগ্রহী করাই বেশি ভালো হবে। কারণ শুধু যে লেখাপড়া দিয়ে দেশ উন্নত হবে তা নয়। ও ক্রিকেট খেলেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের সুনাম আনতে পারে। তো ওকে শুধু লেখাপড়ায় আটকে রাখাটা ঠিক হবে না। দেশের সবাই এক রকম হয় না। সবার মাঝেই একটি অন্য প্রতিভা লুকিয়ে থাকে। পৃথিবীর যে উন্নত দেশগুলো আছে তাদের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় ওরা শুধু লেখাপড়ায় লক্ষ্য দেয় না। যে যেরকম তাকে সেরকমই রাখে। এজন্যই ওরা এগিয়ে যায়।

হ্যালো: আপনার ছোটবেলা সম্পর্কে যদি কিছু বলেন।

জাফর ইকবাল: আসলে বাবা পুলিশে চাকরি করতেন। আমার জন্ম সিলেটে। এরপর সিলেট থেকে গিয়েছি জগদ্দল। সেখান থেকে গিয়েছি পঞ্চগড়। পঞ্চগড় থেকে গিয়েছি চট্টগ্রাম। সেখান থেকে রাঙামাটি, বান্দরবান। এরপর ক্রমে বগুড়া, কুমিল্লা, পিরোজপুর। আসলে বাবা একস্থানে এক বছর কি দেড় বছর থাকতেন। তাই পুরো দেশ ঘুরে ঘুরেই আমার ছোটবেলা কেটেছে। সাধারণ ছেলেদের মতোই থাকতাম আমি। মাঠে খেলতাম, নদীতে সাঁতার কাটতাম।

হ্যালো: হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে আপনার মন্তব্য শুনতে চাই।

জাফর ইকবাল: হুমায়ূন আহমেদ দেশের একজন বড় লেখক ছিলেন বটে। কিন্তু তিনি খুব ভালো ছবিও আঁকতেন। এছাড়া রসায়নের প্রফেসর ছিলেন। গল্প, কবিতা, নাটক লিখতেন। সিনেমার পরিচালনাও করতে পারতেন। তিনি খুব ভালো ম্যাজিক জানতেন। আসলে একজন মানুষের মাঝে এত গুণ থাকাটা একটু আশ্চর্যের। এত বিষয়ে প্রতিভাবান আর কোনো মানুষ আছে বলে আমার জানা নাই।

হ্যালো: আপনি যেখানেই যান সেখানে তো অটোগ্রাফ আর ছবি তোলার জন্য হিড়িক পড়ে যায়। বিরক্ত লাগে না?

জাফর ইকবাল: না। আসলে আমি লেখি মানুষ যাতে খুশি হয়। মানুষের খুশির জন্যই সব। এখন একটা ছবি আর একটা সই যদি তাদেরকে মন ভরা আনন্দ দিতে পারে, তাহলে আমার তা দিতে কোনো সমস্যা নেই তাতে যে পরিমাণ সময় লাগুক।

SCROLL FOR NEXT