আমার কথা

'একলা জেগে রই'

হ্যা

দিদিদের ঘিরেই তো আমার সব চাওয়া-পাওয়া, আবদার, আনন্দ আর বেদনা। আমার জীবনের ভালো খারাপ দুই সময়ের সাথী তারা।

মনে পড়ে সেই ছোটবেলার কথা যখন একসঙ্গে পুকুরে লাফালাফি করতাম, পুতুলখেলা, হাঁড়ি পাতিল খেলা আরও কত কি! যদিও তারা আমার বয়সে বড়। তবুও তারাই ছিলেন আমার খেলার সাথী।

আমি জানি একটি শিশুর হাতে খড়ি হয় তাদের মার কাছে। কিন্তু আমার হাতে খড়ি হয় আমার বড়দিদির কাছে। তিনি আমার প্রথম শিক্ষক। তারা আমার সবচেয়ে বড় আশ্রয় আর কাছের বন্ধুও বটে।

আমার সব রাগ অভিমান তো তাদের কাছেই। মা সংসার আর বাবা ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত। তাই তাদের সাথে তেমন সময় কাটানো হয়নি। না শৈশবে না এখন।

শৈশবে আমার লেখাপড়া করানো, স্কুল পরীক্ষার মতো এমন অনেক দায়িত্ব পালন করেছেন দিদিরাই। ওদের সঙ্গে খুনসুটিও হতো অনেক। খাবার খাওয়া, টেলিভিশনের রিমোট কন্ট্রোলার নিয়ে মারামারি লেগেই থাকত।

কিন্তু এখন সবই স্মৃতি। মনের করিডরে জমে থাকা টুকরো স্মৃতি। বড়দি'র বিয়ে হয়ে গেছে। তিনি থাকেন শ্বশুর বাড়িতে। মাঝে মাঝে বেড়াতে আসেন। কিন্তু তাতে আমার মন ভরে না। যাকে জড়িয়ে না ধরে ঘুমাতে পারতাম না তাকে ছেড়ে দিনের পর দিন কীভাবে থাকি। সেটা এক বিরাট প্রশ্ন!

মেজদি' লেখাপড়া আর চাকরি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তাই তার সাথে আর তেমন করে কথা বলা হয়ে ওঠে না। সময়ের সাথে সাথে তিনিও একদিন এই ঘর ছেড়ে চলে যাবেন। অথচ আমরা কখনও ভাবতেই পারতাম না তিনজন বাস করব তিন জায়গায়! আজ একলা জেগে ভাবছি সেই বোনের কথা, যে খুঁজত তার শোলক বলা কাজলা দিদিকে।

SCROLL FOR NEXT