আমার কথা

নোবেলজয়ী কৈলাস সত্যার্থীর সঙ্গে কিছুক্ষণ

হ্যা

হ্যালোতে শিশু সাংবাদিকতা করার সুবাদে এখন পর্যন্ত সমাজের নানান স্তরের মানুষের সাথে আলাপ করার সুযোগ হয়েছে। কিন্তু সব অভিজ্ঞতাকে ছাড়িয়ে গেছে কৈলাস সত্যার্থীর মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা।

২০১৪ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান কৈলাস সত্যার্থী। শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে, প্রায় ক্রীতদাস শিশুদের মুক্ত ও পুনর্বাসনে কাজ করছেন নিরলসভাবে।

এবার ঢাকা এসেছিলেন ‘১০ কোটি শিক্ষা বঞ্চিত মানুষের জন্য আমরা দশ কোটি’ শীর্ষক কর্মসূচিতে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের অধিকার বঞ্চিত ১০ কোটি শিশুর জীবন মান উন্নয়নে বাংলাদেশের ৬০ লাখ যুবাকেও উদ্যোগী করার কাজ করছেন।

সেই সুবাদে হ্যালো থেকে জানান হলো, কৈলাস সত্যার্থী, বড়দের ছাড়াও দুজন শিশু সাংবাদিককেও কিছু সময় দেবেন।

প্রথমবারের মতো কোনো নোবেল বিজয়ীর সাথে দেখা করতে যাচ্ছি। তাই বেশ উত্তেজিত ছিলাম।    

সন্ধ্যায় চলে গেলাম রাজধানীর গুলশানের এক হোটেলে। সেখানে বসে অপেক্ষা করছিলাম তার জন্য। আমাদের আর তর সইছিল না। প্রহর গুণছিলাম, কখন আসবেন তিনি। কখন দেখা হবে, কথা হবে তার সঙ্গে!

একজন কিংবদন্তীর সাথে কথা বলতে যাচ্ছি। কথা বলার সময় আটকে যাবো না তো? এমন একটা ভয় ছিল। তার নাম ও কাজের কথা জেনেছি আগেই। দেখা হয়ে তার প্রতি মুগ্ধতা আরো বাড়লো। তার সহজ-সরল ব্যবহার আমাদের সব সংকোচ আর ভয় দূর করে দেয়। আমি ও পৃথা মিলে দু’টি প্রশ্ন করেছিলাম। তার উত্তরে তিনি বিশদ করে আমাদের যে উত্তর দিলেন, আমাদের সব উত্তর জানা হয়ে গেল। ইচ্ছে করছিল আরও কথা শোনার। আমাদের প্রত্যাশা পূরণের মতো সময় ছিল না। আর সেটাই ছিল স্বাভাবিক।

মিশুক ও হাস্যোজ্জ্বল মানুষ তিনি। আমাদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন চমৎকারভাবে। তার কথাগুলো ছিল প্রেরণাদায়ী। আমাদের ভবিষ্যতের জন্যও শুভকামনা জানিয়েছেন তিনি। বড়দের নেতিবাচক কাজের জন্য আমাদের কাছে তাদের সবার হয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। অথচ বড়রা হর হামেশা আমাদের দোষ দেন কথায় কথায়। বিনা অপরাধেও আমরাই দুঃখ প্রকাশ করি বারবার।   

বাসায় ফিরতে ফিরতে একটু রাত হয়ে যায়। কিন্তু স্কুলে পুরো ক্লাস শেষের আগেই চলে আসা আর বেশ রাত করে বাড়ি ফেরাটা সার্থক মনে হচ্ছিল। তার সঙ্গে কথা বলতে পারার অভিজ্ঞতাটা সাংবাদিকতার জীবনে এক মাইলফলক আর সারা জীবনের জন্য এক স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে।  

SCROLL FOR NEXT