
বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো আয়োজন করল এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক স্কাউট জাম্বুরি। আমি এতে অংশ নিতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের জাম্বুরির উদ্বোধন করেন। গাজীপুরের মৌচাকে বাংলাদেশ স্কাউটসের জাতীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ৯ দিনব্যাপী এই জাম্বুরি অনুষ্ঠিত হয়।
আমরা ঠাকুরগাঁও থেকে ১৮ তারিখ রাতে রওনা দেই এবং ১৯ তারিখ সকালে গাজীপুর মৌচাকে পৌঁছাই। ক্যাম্পের আঙিনায় ঢুকেই দেশের নানা স্থানের মানুষদের দেখে একটু অন্যরকম অনুভূতিই হচ্ছিল।
ভোরের শিশির ভেজা ঘাসের উপর দিয়ে আমরা আমাদের তাবুতে পৌঁছাই। এই প্রথম এত দূরে পরিবারকে ছেড়ে থাকতে এসেছি। কিন্তু এটিও তো নতুন একটা পরিবারই। ক্যাম্পে এসে নিজের জীবনকে কীভাবে সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে হয় তা প্রায় সবই শিখেছি।
ক্যাম্পে নিজেদের কাজ নিজেরাই দলবদ্ধভাবে করেছি। তাবুতে মাটির উপর একটা চাদর বিছিয়ে ঘুমিয়েছি, নিজের কাপড় নিজেই গুছিয়েছি, নিজেই কাঠ-খড় পুড়িয়ে রান্না করেছি, এমনকি বাজারও নিজেরাই করেছি।
মনে হচ্ছিল যেন ভিন্ন এক জগতে চলে এসেছি। ক্যাম্পে কেউই চিরচেনা মুখ নয় সবাই নতুন। ক্যাম্পে প্রতিটি দিনই কাটতো বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে। দ্বিতীয় দিন বিজ্ঞান যন্ত্র আবিষ্কার বিভাগে আমাদের দল প্রথম স্থান অর্জন করায় সবাই বেশ উচ্ছ্বসিত ছিলাম।
পরের দিন তাবুকলায় সেরা দশ হওয়ায় আমরা আরও আনন্দ অনুভব করি। এভাবেই কাটতে থাকে দিনগুলো। যেই কাজগুলো আমি বাসায় করতাম না, এখানে আমাকে সেগুলোই করতেই হয়েছে। আমি এখন নিজের কাজ নিজে করতে শিখেও গেছি। ক্যাম্পের শেষ দিন আমরা দেয়ালিকা প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে হ্যাট্রিক করি।
ক্যাম্পের দিনগুলো আমার কাছে সোনালী মুহুর্ত হয়ে স্মৃতির পাতায় রয়ে যাবে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৪। জেলা: ঠাকুরগাঁও।