২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২। তখন সন্ধ্যা ছুঁই ছুঁই। একদিনের রাঙামাটি ভ্রমণ শেষে ক্লান্ত শরীরে প্রিয় বন্ধুকে নিয়ে বসে আছি বাস স্ট্যান্ডে, কখন আসবে ঢাকার বাস।
তখনই পাঁচ/ছয় বছরের একটি শিশু আমাদের কাছে এসে হাত বাড়িয়ে টাকা চাচ্ছে। টাকা দিয়ে কী করবে জিজ্ঞেস করতেই উত্তর দেয়, সে বাদাম খাবে। তারপর তাকে বললাম টাকা দিচ্ছি, তুমি বাদাম কিনে আন, আমরা তিনজনই খাই একত্রে।
এরপর খাচ্ছি আর ওর সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছিলাম। সে জানায়, তার বাবা ঢাকায় থাকেন। কিন্তু ঢাকায় কোথায় থাকেন এটা সে বলতে পারে না।
শিশুটি এখানে কোথায় থাকে, কার কাছে থাকে, বাইরে ঘুরছে কেন, টাকা তুলছে কেন ইত্যাদি নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে মনে। এরপর শিশুটিকে নিয়ে চলে গেলাম তার বাসায়।
সেখানে গিয়ে জানতে পারি তার বাবা-মা নেই। সে থাকে খালা আর নানুর কাছে। বাবা-মা পালিয়ে বিয়ে
করে এরপর তার জন্মের পর তারা দায়িত্ব নেননি। কোথায় গেছেন তা জানেন না তারা।
একটি শিশু এভাবে রাতের অন্ধকারে বাইরে ঘুরে ঘুরে সাহায্য চায়- এটা দেখে যতটা খারাপ লেগেছে, তারচেয়েও বেশি কষ্ট পেয়েছি তার পরিবার সম্পর্কে জেনে। তার জীবনটা তো আরেকটু সুন্দরও হতে পারত!
আরও কথা বলে জানতে পারি, জন্ম সনদ নেই তাই তাকে স্কুলে ভর্তি করাতে পারছে না। তার নানু বলছিল, মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দিবে। তখন আমাদের পক্ষে তার জন্য করার মতো তেমন কিছুই ছিল না৷
প্রতিবেদকের বয়স: ১৬। জেলা: ঢাকা।