কয়েক বছর আগে থেকে আমি নিয়মিত পরিবেশ দূষণ সম্পর্কিত লেখা ও কিছু গবেষণাপত্র পড়ছি। নিজের আগ্রহ থেকে ও অন্যকে পরিবেশ দূষণ রোধে করণীয় সম্পর্কে অবগত করার জন্যই এ নিয়ে আমি নানা বিষয়ে জানার চেষ্টা করি।
গেল দুই বছরে আমি অবাক করা অনেক তথ্য জানতে পেরেছি। সেই তথ্যগুলোর মধ্যে একটি হলো সাবান বা বডি ওয়াশের মাধ্যমেও পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এই তথ্যটি জেনে আমি খুব অবাক হয়েছি।
হেলথলাইন নামের একটি ব্লগসাইট থেকে জানতে পারি, বডি ওয়াশ বা শাওয়ার জেলের তুলনায় সাবান বেশি পরিবেশবান্ধব। কারণ সাবান পুনঃব্যবহারযোগ্য বক্সের মাধ্যমে প্যাকেজিং করা হয়। সবান ব্যবহারের পর বোতলের মতো কোনো উচ্ছিষ্ট বস্তু থাকে না।
এছাড়াও, ২০০৯ সালে আমেরিকান ক্যামিক্যাল সোসাইটি কর্তৃক প্রকাশিত “কম্পেয়ারিং দ্যি এনভায়রনমেন্টাল ফুট প্রিন্টস হোম কেয়ার এন্ড পার্সোনাল হাইজিন প্রোডাক্টস: দ্য রিলিভেন্স অব ডিফরেন্ট লাইফ সাইকেল ফেইজেস” শীর্ষক একটি গবেষণা থেকে জানা যায়, কোনো ব্যক্তি যদি একবার বডিওয়াশ বা সমজাতীয় লিকুইড ব্যবহার করেন তাহলে যে পরিমাণ কার্বন ফুটপ্রিন্ট নিঃসৃত হয় তার পরিমাণ বার সবান ব্যবহারের চেয়ে ২৫ শতাংশ বেশি। এছাড়া গবেষণাটি থেকে জানা যায়, বার সাবানের চেয়ে বডি ওয়াশ তৈরিতে ৫ শতাংশ বেশি শক্তি ব্যয় হয়।
বিবিসি সায়েন্স ফোকাস ম্যাগাজিন থেকে জানতে পারি, বডি ওয়াশ বা শাওয়ার জেল তৈরিতে ব্যবহার করা হয় পেট্রোকেমিক্যাল জাতীয় ডিটারজেন্ট, অপরদিকে সাবান তৈরিতে উদ্ভিজ্জ বা প্রাণিজ চর্বির সঙ্গে সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইডের বিক্রিয়া করানো হয়, যা পেট্রোকেমিক্যালের তুলনায় পরিবেশবান্ধব।
বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে হলে আমাদের এখনই সতর্ক হতে হবে। আমরা না জেনে প্রতিনিয়ত পরিবেশের ক্ষতিসাধন করে চলছি। যার কারণে আমরা এখন জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে আছি।
আমি চলতি বছর থেকে বডি ওয়াশ বা সমজাতীয় লিকুইড ব্যবহার করা বন্ধ করে দিয়েছি। আমাদের ছোট ছোট পদক্ষেপ পরিবেশ রক্ষায় বড় অবদান রাখতে পারে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৭। জেলা: কিশোরগঞ্জ।