বইতে পড়েছি, শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতি উন্নতি লাভ করতে পারে না।
বইতে আরও পড়েছি, আজকের শিশুরাই আগামীর ভবিষ্যৎ। কথা দুইটির মিলিত অর্থ হলো, শিশুদের সুশিক্ষা নিশ্চিত করার মাধ্যমে জাতির সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণ করা যায়।
শিক্ষা প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার। ধনী গরিব নির্বিশেষে সকল শিশুর শিক্ষা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু নানা দিক বিবেচনায়, আমার মনে হয় বাংলাদেশের সকল শিশু এখনো শিক্ষার আওতায় আসতে পারেনি।
আমি মাঝেমধ্যে এমন অনেক এলাকার কথা শুনি, যেখানে শিক্ষার আলো এখনো পৌঁছায়নি। এছাড়া বেদে সম্প্রদায়সহ কিছু জনগোষ্ঠীর কথাও শোনা যায়, যেসব জনগোষ্ঠীর শিশুদের শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হতে হয়।
এছাড়াও রয়েছে পথশিশুরা। জীবিকার তাগিদে পরিবারসহ বা পরিবার ছুট হয়ে অনেক শিশু এখনো পথে-ঘাটে বাস করে। আমরা তাদের পথশিশু বলি।
সম্প্রতি ইউনিসেফের ‘সার্ভ অন স্ট্রিট চিলড্রেন ২০২২’ শীর্ষক জরিপের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের মোট পথশিশুর সংখ্যা জানা না গেলেও এই সংখ্যা দশ লাখের অধিক হতে পারে ইউনিসেফের বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন। তাহলে এই পথশিশুরাও অনায়াসে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
শিশুদের শিক্ষা লাভের পথে আরেকটি বড় বাধা শিশুশ্রম। সম্প্রতি ইউনিসেফের প্রকাশ করা আরেকটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাল্যবিয়ের ঝুঁকিতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সবার উপরে।
বাল্যবিয়ের কারণে বিশেষ করে মেয়ে শিশুদের পড়াশোনা সবচেয়ে বেশি বাধাগ্রস্ত হয়। এছাড়া বাল্যবিয়ে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশকেও বাধাগ্রস্ত করে।
আমি দেখেছি সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীরা প্রায়ই ক্লাসরুমে অনুপস্থিত থাকে। কেন তারা নিয়মিত শ্রেণিকক্ষে আসছে না, সে কারণগুলো খুঁজে বের করা দরকার।
আমি মনে করি, শিক্ষাখাত নিয়ে সরকারকে আরও উদ্যোগী ও আন্তরিক হওয়া প্রয়োজন। প্রত্যেক শিশুকে শিক্ষার আওতায় আনার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। সকলকে শিক্ষার আওতায় আনা গেলেই তবে প্রকৃত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৫। জেলা: জামালপুর।