নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলালে কমবে বাল্যবিয়ে

বাল্যবিয়ের শিকার সাধারণত মেয়েরাই বেশি হয়ে থাকে। ছেলেদের ক্ষেত্রে তা কমই শোনা যায়।
নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলালে কমবে বাল্যবিয়ে

সাধারণত বাল্যবিয়ে অভিভাবকদের ইচ্ছেতেই হয়ে থাকে। ছেলেদের ক্ষেত্রে তারা আবার সচেতন এখন। ছেলে আয়-রোজগার করবে, প্রতিষ্ঠিত হবে তারপর বিয়ে। ঠিক একই অভিভাবক মেয়ের ক্ষেত্রে এভাবে ভাবতে চান না।

অনেকেই ছেলে সন্তানকে ভালো স্কুলে পড়াতে চান কিন্তু একজন মেয়ের বেলায় তা চান না। অনেক সময় ছেলেকে ভালো প্রতিষ্ঠানে পড়াতে শহরেও পাঠিয়ে দেন। 

এখনো অনেক পরিবারই মেয়েদেরকে বোঝা বলে মনে করেন। তারা মনে করেন মেয়েদের তো বিয়ে দিলে শ্বশুর বাড়িতে চলে যাবে। ছেলেরা সংসারের হাল ধরবে। এটাকেই সফল পরিণতি মনে করেন।

অনেক অভিভাবক ইভটিজিং বা যৌন হয়রানি থেকে মেয়েকে রক্ষা করতেও বাল্যবিয়ে দিয়ে দেন। মেয়ের স্কুল বা কলেজ দূরে হওয়ার কারণে তাকে রাস্তায় একা পাঠাতে ভয় পান অভিভাবকেরা। এগুলোও কারণ বলে মনে করি আমি।

ধর্মান্ধতা বা কুসংস্কার থেকেও অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের খুব অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দেন। তারা মনে করেন বিয়ে দিয়ে দিলে হয়ত তাদের সন্তানেরা অবৈধভাবে কোনো সম্পর্কে লিপ্ত হবে না। কিন্তু তারা এটা জানে না বা বোঝে না বিয়ের পরও অনেকে নতুন সম্পর্ক তৈরি করতে পারে। এমন গোঁড়ামির ফল ভোগ করতে হয় একটি শিশু মেয়েকে। 

বাল্য বিয়ে বন্ধে প্রথমত অভিভাবকদের জানতে হবে ছেলে ও মেয়ে উভয়ই সমান। ছেলে যেমন সংসারের হাল ধরতে পারে, তেমনই উপযুক্ত ভাবে বড় করতে পারলে সেও ধরতে পারবে সংসারের হাল। আমাদের দেশ এর বড় উদাহরণ। নারী কতটা বড় পদে আসিন হতে পারেন, কতটা দায়িত্ব পালন করতে পারেন তা আমরা দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা কিংবা জাতীয় সাংসদের স্পিকারকে দেখলেই বুঝতে পারি।

দরিদ্রতা আমাদের দেশের অনেক বড় একটি সমস্যা। তবে ছেলে সন্তান ও মেয়ে সন্তানের প্রতি সমান দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হলে অসচ্ছলতা থাকলেও বাল্যবিয়ে হবে না বলে আমার বিশ্বাস। এভাবে যদি অভিভাবকেরা ভাবেন যে, দরিদ্রতার জন্য আমি আমার ছেলেকে তো বিয়ে দিচ্ছি না তবে মেয়েকে কেন দিব? এই মানসিকতাটুকু পরিবর্তনেই সমাজের সবাইকে কাজ করতে হবে।

বাল্যবিয়ে একজন কিশোরীর জন্য অভিশাপ। একজন কিশোরী যখন বাল্যবিয়ের শিকার হয় তখন সে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শারীরিক ও মানসিক ভাবে। অল্প বয়সে একজন নারী যখন মা হয় তখন সে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তৈরি হয় মৃত্যু ঝুঁকিও।

আমাদের উচিত বাল্যবিয়ে বন্ধে এক সাথে কাজ করা। প্রয়োজনে আইনের সাহায্য নেওয়া।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com