বিশ্বব্যাপী মহামারির কারণে গত বছর থেকে ঈদের এ সহজাত উদযাপনটা আর দেখছি না। ব্যক্তিগতভাবে দেখলে আগে আমার ঈদ উদযাপন এবং এখনের ঈদ উদযাপন বদলে গেছে অনেকটা।
আমার জন্য ঈদ মানেই ছিল গ্রামের বাড়ি যাওয়া। সারা বছরে আর কোনোদিন যাই আর না যাই, ঈদের দিন নানুবাড়ি ও দাদুবাড়ি এক ঝলক দেখাটা জন্ম থেকে অভ্যাস। গত বছর থেকে সে অভ্যাস বিলীন প্রায়। এখন আর ঈদেও যাওয়া হচ্ছে না বাড়িতে।
কোরবানির ঈদে বাড়িতে মাংস আসার পর প্রতিবেশিদের দিতাম। এ বাড়ি ও বাড়ি যেতাম। কী আনন্দ! দুপুর থেকেই আঙিনা ভরে যেত মানুষে, নিম্নআয়ের অনেকেই আসতেন মাংস নিতে। দরিদ্র মানুষকে মাংস বিলাতে আমার খুব ভালো লাগত।
এরপর বাসায় রান্না হলে সবাই মিলে খেতাম। শেষে খানিকটা বিশ্রাম নিয়ে বিকেল বেলা বের হতাম ঘুরতে।
বোনেরা সবাই মিলে সেজেগুজে নিতাম ভালো করে ছবি তোলার জন্য। বেশিরভাগ সময়ই উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘোরাঘুরি করতাম। সবাই মিলে হৈ-হুল্লোড় করে ঘোরাটাই যে মুখ্য তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
অথচ এখন সব কিছুই কেমন পুরনো দিনের গল্প মনে হয়। মহামারিতে অনেকে আর্থিকভাবে অসচ্ছল হয়ে গেছেন, কোরবানি দেওয়া যাদের সম্ভব হয়নি তাদের খোঁজ নেওয়াটাও আমাদের দায়িত্ব। এখন ঈদে কতকিছু ভাবতে হচ্ছে নতুন করে, যেগুলো আগে ছিল না। আমরা সত্যিই নতুন বাস্তবতায় চলে এসেছি।
আর আমাদের ঘরে বসে স্মৃতিচারণ ছাড়াও তেমন কিছু করার নেই। এবার গ্রামের বাড়িও যাওয়া হয়নি। ঘরে বসেই কেটে যাবে ঈদ।