সুন্দরবনে শিক্ষাসফর

বলছি ২০১৮ সালের কথা। আমাদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঠিক করলেন এবারের শিক্ষাসফর হবে নড়াইলে।
সুন্দরবনে শিক্ষাসফর

কিন্ত না! স্যারের কথা অনুযায়ী শেষ পর্যন্ত আর নড়াইল যাওয়া হয়নি। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বলল তারা যাবে সুন্দরবন। তাদের মতামতকেই প্রাধান্য দিয়ে ঠিক করা হলো এবার শিক্ষাসফর হবে সুন্দরবনের হাড়বাড়িয়ায়। 

২৮ জানুয়ারি সকাল ৬ টার মধ্যে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত হলাম। আমরা ১৪৭ জন শিক্ষার্থী আর শিক্ষক ১৮ জন। সকাল ৭টার দিকে বিদ্যালয়ের পেছনে চারটি বাস এসে দাঁড়ায়। আধা ঘণ্টা পর স্যারের নির্দেশে আমরা বাসে উঠলাম। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হয় আমাদের যাত্রা।

আমরা সকাল ৮.৫০ মিনিটে মংলা বন্দর ছেড়ে পশুর নদীর তীরে পৌঁছাই। সেখানে বন-বিভাগের কর্মকর্তাদের বিশ্রামাগারে রান্নাবান্না করার কথা ঠিক হলো। তারপর আমরা উঠলাম লঞ্চে। বেলা ৯.২০ মিনিটে লঞ্চ ছাড়ল। এসময় দেখতে পেলাম নৌ-নিরাপত্তারক্ষী, জেলে আর বড় বড় জাহাজ। 

আমরা করমজলে ঢুকতেই অনেকগুলো বানর দেখতে পাই। পশুর, সুন্দরী, গেওয়া, গোল, হর-গোজসহ নানা রকম গাছপালা রয়েছে সুন্দরবনে। বাঘ, হরিণের পায়ের ছাপও দেখতে পেলাম সেখানে। বনে অনেক সুন্দরী গাছের শ্বাসমূল দেখলাম। 

হঠাৎ চোখে পড়ে একটু গুহা। আমরা জানতে পারি, এটি বাঘের গুহা। আমরা সেই জায়গাটি খুব সাবধানে ত্যাগ করি। 

এরপর একটি স্বাদু পানির পুকুর পাই। চারপাশে লবণাক্ত পানি থাকলেও ওই পুকুরের পানি মিষ্টি। প্রকৃতির কী অপরুপ বৈচিত্র্য! ওই পুকুরে শাপলাও ফুটেছে। এক ঝাঁক হরিণ এসে পানি পান করছে। 

অতঃপর আমরা বনবিভাগের কার্যালয়ে পৌঁছাই। ঘড়িতে যখন সময় বেলা চারটা, তখন দুপুরের খাবার খাওয়া হয়। খাবারের তালিকায় ছিল খাসির বিরিয়ানি, ডিমের কোরমা ও কোমল পানীয়। 

বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে আমরা বাগেরহাটের উদ্দেশ্য রওনা দিলাম। এসে পৌঁছাতে সন্ধ্যা ৭ টা বেজে গেল। দিনটি ভোলার মতো নয়। কেননা প্রিয় শিক্ষক আর বন্ধুরা ছিল এই সফরের সারথি।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com