দেড় বছর ধরে ঘরে বসে বসে জীবন থেকে সময় ব্যয় ছাড়া খুব একটা কিছু করতে পারিনি। কী করছি আমরা, কীভাবে বেড়ে উঠছি?
Published : 06 Jun 2021, 10:56 PM
আমার বাসায় দুজন শিশু আছে। তাদের দেখে বিষয়টা খুব করে চোখে পড়ল। আসলে কীভাবে বেড়ে উঠছে এই সময়ের শিশুরা?
এই বিষয়টি ভাবতে গিয়ে বেশ হতাশ আমি। বিশেষ করে শহরের শিশুরা। জীবন অনেক বেশি সংকীর্ণ তাদের কাছে। চাওয়া পাওয়াগুলো যান্ত্রিক। বেশির ভাগ শিশুরাই প্রযুক্তি নির্ভর জীবনযাপন করে। এই মহামারিতে এটা আরো বেড়েছে।
আমার দৃষ্টিতে বই পড়া কিংবা জানার আগ্রহ খুব কম এই শিশুদের। সময় পেলেই এখানে মোবাইল ফোনই একমাত্র চাওয়া। তাদের বিশ্ব ওই মোবাইল ফোনের মধ্যেই আছে, কিন্তু বিশ্বকে জানার আগ্রহ নেই সেখানে।
পরিবারের সাথে সম্পর্কগুলোও কেমন বিচ্ছিন্ন আর দূরত্বের হয়ে যাচ্ছে। রাগ, জেদ, অভিমানগুলো খুব ছোট ছোট বিষয় নিয়ে তৈরি হচ্ছে। এটা না দিলে পড়ব না, ওটা না দিলে খাব না ইত্যাদি। এই ছোট ছোট বিষয়গুলোর মাধ্যমে ছোটবেলা থেকেই জেদী হয়ে উঠছে।
আমি বলব বাবা-মায়েদেরও এ বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞানের ঘাটতি রয়েছে। প্যারেন্টিং এর ক্ষেত্রে আমাদের বাবা মায়েরা এখনো সচেতন নয়।
পরিস্থিতি যখন এমন তখন এটা নিয়ে ভাবতেই ভয় হয়। যে প্রজন্ম দেশকে-বিশ্বকে নেতৃত্ব দিবে তাদের কাছে এগুলো কেউই আশা করে না। উদ্ভাবনী শক্তি আর বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন একটা প্রজন্ম হয়ে আমরা বেড়ে উঠতে পারছি না।
আমার মতে, একটা সুস্থ সুন্দর পারিবারিক পরিবেশই পারে তাদেরকে জীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে। অনেকেই অসম্ভব প্রতিভার অধিকারী। তাদের সেই প্রতিভাকে সঠিক ভাবে বিকশিত করতে এগিয়ে আসতে হবে পরিবারকে। শিশুদেরকে এসব বিষয়ে যাথাসম্ভব সাহায্য ও সমর্থন করা উচিত।
শিশুদের ভালোবাসা দিয়ে বড় করে তুললে তারা তাদের সেরাটা দিতে পারে। তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। শিশুরা খেলবে, আনন্দ করবে, সুন্দরভাবে বেড়ে উঠবে এই প্রত্যাশা সকলের। ভালোবাসাময় সেই পৃথিবী গড়তে এখন থেকেই সচেতন হতে হবে আমাদের। তারা যেন সেরাটা দিতে পারে দেশকে।