মনোবিদরা বলেন, এটি খুবই মানসিক যন্ত্রণা তৈরি করে। এর ফলে লক্ষ্য বস্তুতে পরিণত হওয়া ব্যক্তি অনুভব করে যে, সে সমাজের মানদণ্ডের সাথে মানানসই না। যা তার জীবনকে তিক্ত, বিচ্ছিন্ন এবং ভয়াবহও করে তুলতে পারে।
কালো মেঘ সুন্দর, কালো চোখ সুন্দর, কালো চুল সুন্দর। কাব্য-উপন্যাসে কতভাবেই না কালোকে মোহিত করা হয়েছে। ইসলাম মতাবলম্বীদের কেউ কেউ শুনেছি সম্মানের জায়গা থেকে কালো জুতাও পরেন না। কারণ কাবা ঘরের আচ্ছাদনটা কালো কাপড়েই করা হয়। কিন্তু যত বিপত্তি এই কালোই যখন গায়ের রঙে পরিণত হয়। এটা সেটা কতকিছু বলে তার শরীরের ওপর অনধিকার চর্চা করি।
কারো গায়ের রঙ না শুধু, শারীরিক গড়ন নিয়ে হাসি-তামাশা করতেও বাদ রাখি না আমরা। আমাদের দেশে সবাইকে যে উচ্চতার দেখে থাকি সাধারণত তারচেয়ে কম বা বেশি হয়ে গেলেই বিপত্তি। আমাদের চোখ সেটাকে আর স্বাভাবিকভাবে দেখতে চায় না। ততটুকু থেমে থাকলেও হতো, কিন্তু চোখের পরই আমরা কাজে লাগাই মুখকে। অশোভন আর আপত্তিকর নানা নামে তাকে ডাকা শুরু করি। বেশি লম্বা হলে ডাকি কী রে তালগাছ, বা ওই লম্বু। খাটো হলে তো কথাই নেই।
কারো চোখ যদি ট্যারা হয়, তাকে নিয়েও আমরা মজা করি। দোস্ত আমার দিকে না অন্য দিকে তাকিয়ে আছিস? ইত্যাদি মজার ছলে নানা কিছু বলে মানসিকভাবে আহত করি তাকে।
বুলিং, রেসিজম, বডি শেইমিং যে মানুষকে লক্ষ্য করে করা হয় সে মুখ ফুটে কিছু বলতে না পারলেও কষ্ট পায়। উন্নত বিশ্ব এগুলো নিয়ে এখন বেশ সোচ্চার। সামাজিকভাবে অপরাধ হিসেবে এখন গণ্য করছে অনেক দেশ।
শিশু বয়সে আমাদের বিচার, বিবেচনা কিংবা বোধশক্তি সবকিছুই থাকে অনেক অপরিপক্ক। আশপাশ থেকে দেখেই শিশুরা আস্তে আস্তে সবকিছু শিখতে থাকে। সমাজের এই ব্যাধির প্রভাব তাদের উপরও পরে। তাই এক্ষেত্রে বড়দের দায়িত্ব অনেক।
কাছের বন্ধুর কথাতেই যখন বন্ধুকে মর্মাহত হতে হয় এটা অবশ্যই সমাজের ওপর দায় আসে। কারণ এটি সামাজিক ও পারিবারিক শিক্ষার অংশ।