সেখানে আমার এক আন্টি ও এক দুলাভাই চাকরি করেন। তো আন্টি বাড়ি এলে সিদ্ধান্ত হলো আমি আন্টির সঙ্গে ককবাজার যাব। সঙ্গে যাবেন আমার দাদি, ফুপাত ভাই।
৫ ডিসেম্বর রওনা দিলাম কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে। ঠিক পরের দিন ৬ তারিখ সকাল ১১ টার দিকে নামলাম কক্সবাজারের কলাতলী আর্দশ গ্রামে।
সেখানেই বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন আমার আপু আর দুলাভাই। তাদের বাসাতে দুপুরে খাওয়া শেষে সন্ধ্যার আগ মূর্হতে চলে গেলাম সমুদ্রের ধারে। সমুদ্র দেখে আমার মনে হলো এ আমি কোথায় এলাম? বিস্মিত নয়নে চেয়ে দেখলাম কূলহীন দরিয়া।
এরপর কিছুক্ষণ পানিতে হাঁটাহাঁটি করলাম। পানি ছুঁয়েছিলাম, এ সময়ের সূর্যাস্তের দৃশ্যও সুন্দর।
কক্সবাজারের সবচাইতে মনোমুগ্ধকর ব্যাপারটি হলো এর বিচিত্রতা। একেক জায়গায় সৈকত একেক রকম।
তারপর অনেক অনেক ছবি তুলে ঠিক রাত ৮টার দিকে বাড়ির দিকে রওনা করি। পথে এক জায়গায় কনসার্ট হচ্ছিল। থেমে কনসার্ট দেখলাম, শেষে এক রাশ ক্লান্তি আর আনন্দ নিয়ে বাসায় ফিরলাম।
পরের দিন আবারো সমুদ্রে দাপাদাপি শেষে আন্টির বাসা উখিয়ায় চলে গেলাম। আমার কাছে বাংলাদেশের সব চাইতে সুন্দর জায়গাগুলোর একটি হলো কক্সবাজারের হিমছড়ি। জায়গাটি কক্সবাজার মূল শহর থেকে বেশ খানিকটা দূরে।
অনেক সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হলো হিমছড়ি পাহাড়ের উপর। এই পাহাড়ে উঠতেই দেখতে পেলাম পাহাড়ের পর পাহাড়। আহা কী সুন্দর!
তারপরে আন্টির সঙ্গে গেলাম রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। সেখানে একটা বাজার ঘুরলাম। টুকটাক কেনাকাটাও হলো আমার।
পাহাড়ের ওপর রোহিঙ্গাদের ঘর দেখলাম। তারপরে আবার ফিরে আসলাম কক্সবাজার। সেখানেও একটা বাজারে ঘুরলাম। বাদাম, চকলেট কিনলাম।
কক্সবাজারে প্রায় ১৫ থেকে ১৬ দিন ছিলাম। প্রথম প্রথম সমুদ্রে নামতে ভয় লাগত। একদিন নেমে গোসল করার সময় বড় এক ঢেউ আমাকে ধাক্কা দিল, নাকে মুখে পানি ঢুকে গেল। ও মা! পানি যে এত নোনতা ভাবতেও পারিনি। তারপরে ধীরে ধীরে ভয় কেটে গেল।
কক্সবাজারে যে কয়দিন ছিলাম একবারও মনে হয়নি বাড়ি ফিরে যাব, মনে হচ্ছিল এইখানে সারা জীবন থাকি। কিন্তু বাড়ি তো ফিরতেই হবে। আবারও আসব বলে মনকে বুঝিয়ে বাড়ি ফিরে আসি। জীবনের প্রথমবারের এই ভ্রমণ আমার সারা জীবন মনে থাকবে।