শুনেছি, লক্ষ্মীপুরের নবম শ্রেণির পড়ুয়া হিরা মণিকে দিনের আলোতে পাশবিক নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে পশুর দল।
জীবন এগিয়ে চলছে, আমি বড় হচ্ছি। তবে প্রত্যেকটা ধাপে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে থাকতে হচ্ছে দুশ্চিন্তায়।
হিরাকে নিয়ে লিখতে ইচ্ছা হওয়ার কারণটা হলো আমার আর মেয়েটার বয়স কাছাকাছি। ওর হত্যার কথাটা কথা শোনার পর আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিল। মা এমনিতেই আমাকে নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় থাকেন, আরো বেশি চিন্তিত হয়ে উঠলেন।
বাংলাদেশে আমার নিরাপত্তা কে দেবে? যে বাংলার মাটিতে আমার বেড়ে ওঠা, সেখানে দিনে-রাতে, প্রতিদিন, প্রতি মাসে, প্রতি বছরে, বছরের পর বছর ধরে শিশু, কিশোরী, তরুণী, প্রৌঢ় এমনকি বৃদ্ধা পর্যন্ত পাশবিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
তখন তাদের নামের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে ধর্ষিতা। নির্যাতনের শিকার এবং অকালে প্রাণ হারিয়েছেন কত মেয়ে? কে তাদের কথা মনে রাখে? সেই পরিসংখ্যান কারও মাথা ব্যথার কারণ হয় কি?
ভুক্তভোগী পরিবার ছাড়া অন্যদের কাছে পরিসংখ্যান শুধুই সংখ্যা মনে হলেও ভুক্তভোগীর পরিবার জানে দিন রাত কতটা অবহেলা সহ্য করে চলতে হয় তাদের, কত কটু কথা শুনতে হয় সমাজে।
যারা নির্যাতন করছেন তারা কোনো না কোনো ভাবে আড়ালে চলে যান। অনেক সময় প্রাপ্য শাস্তিটুকু তাদের দিতে পারি না আমরা।
দিন দিন তাই বেড়ে চলছে এই সংখ্যা। কন্যা সন্তান নিয়ে বলতে গেলে ভয়েই দিন কাটান অভিভাবকরা।
মেয়েটার মনেও কাজ করতে থাকে এক ধরনের শঙ্কা। ধর্ষণ/ধর্ষিতা/ধর্ষক এই সকল শব্দকে মুছে ফেলতে আমাদের সমাজ কি আদৌ পারবে? আমাদের নিরাপত্তা কি দেবে রাষ্ট্র?
মেয়েদের স্বাধীনতার কথা বলার আগে নিরাপত্তা নিশ্চিত এখন সময়ের দাবি। সময় এসেছে আমাদের জন্য নতুন সমাজ গড়ার।যেখানে আমরা মেয়েরা নির্যাতনের শিকার হবে না। আইনের সঠিক প্রয়োগ করতে হবে।
পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রে নৈতিক মূল্যবোধের চর্চা করতে হবে৷ আর কোনো মেয়েকে যেন নির্যাতনের শিকার হতে না হয় সে ব্যাপারে সকলকে সোচ্চার থাকতে হবে।