অন্য সবার মতো আমিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করি। অন্য মাধ্যমগুলোর চাইতে ফেইসবুক বেশি ব্যবহার করি। তাই প্রায়ই চোখে পড়ে যায় নানা অসঙ্গতি।
নিরাপদ ইন্টারনেট সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা নেই। সবার শুধু লাইক, কমেন্ট আর শেয়ার দরকার আর ভিডিও হলে চাই লাখ লাখ ভিউ। এজন্য কত মানুষ কত কিছু করে সেটা লিখে শেষ করা যাবে না। ভাইরাল হবার সে কী চেষ্টা! অনেকে ভুয়া ও ভিত্তিহীন সংবাদ ছড়িয়ে দিচ্ছে ভাইরাল হওয়ার জন্য।
এটা একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার অনেকে না বুঝে ফেইসবুকে ভয়ঙ্কর রক্তাক্ত ছবিও প্রকাশ করে।
উদাহরণ হিসাবে সুনামগঞ্জের শিশু তুহিন হত্যার ছবির কথা বলতে পারি, এরকম একটা ছবি পোস্ট করা কি ভালো কাজ হয়েছে? শুধু কী তাই কিশোর অপরাধীর ছবি প্রকাশ করা নিষিদ্ধ হলেও অনেকে হরহামেশাই তা করছে। আমাদের আগে ফেইসবুক চালানো শেখা উচিত।
আবার অনেকে গুজব রটিয়ে হাঙ্গামা সৃষ্টিও করে। আমাদের অবস্থা এইরকম চিলে কান নিয়া গেছে, আগে কানে না হাত দিয়ে চিলের পেছনে দেই দৌড়।
কক্সবাজারের রামু, চট্রগ্রামের নাসিরনগর আর সবশেষ ভোলার বোরহানউদ্দিনে কী তুলকালাম কাণ্ডই না হয়ে গেল। দফায় দফায় সংঘর্ষে চারজন নিহত হন আর আহত হন ১০ পুলিশ সদস্যসহ শতাধিক।
শুধু এইসব নয় ফেইসবুকে অপরিচিতদের সাথে বন্ধুত্ব করে অনেকে প্রতারণার শিকারও হয়েছেন। ইন্টারনেটে গড়ে ওঠা প্রতারক চক্রদের মাঝেই মাঝেই ধরতে দেখি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। আবার ভার্চুয়াল এই জগতেও নারীরা বেশির ভাগ সময় যৌন হয়রানির শিকার হন৷
‘বাংলাদেশে সাইবার অপরাধের প্রবণতা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন। সেই প্রতিবেদনে দেখা যায় বাংলাদেশে সাইবার অপরাধের যতগুলো ঘটনা ঘটেছে তাতে ৬৭ শতাংশেরও বেশি ক্ষেত্রে নারীরাই হয়রানির শিকার হয়েছেন।
আমার অনেক বান্ধবীরা মাঝে মাঝেই অভিযোগ করে। তাদের ফেইসবুক একাউন্ট রাতারাতি হ্যাক হয়ে যায়। ফলে দুদিন পর পর নতুন একাউন্ট খুলতে হয়। এছাড়া ভিন্ন ধরনের মানুষ ভিন্ন রকম বাজে মন্তব্য করে এবং ইনবক্সে বার্তা পাঠায়। এমন কী মানুষ নাকি অশ্লীল ছবিও পাঠায় যা যন্ত্রণাদায়ক।
এসব যে সমীচীন নয় তা আমরা কবে বুঝব, কবে একটু শিষ্টাচার শিখব?