কাঁধে ব্যাগ, স্কুল বা কলেজ ড্রেসে বাসের সামনে জটলা করে দাঁড়িয়ে আছে অনেক শিক্ষার্থী। বাসে সিট ফাঁকা কিন্তু দরজায় চালকের সহকারী কোনো শিক্ষার্থীকেই উঠতে দেয় না। এমন চিত্র তো অহরহ! কারণ শিক্ষার্থীদের হাফ পাস আছে বলে, তবে সাধারণ যাত্রীদের কোনো নিষেধ নেই।
এটা কি এক ধরণের বৈষম্য নয়? পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে এই নিয়ম আছে কিনা আমার সন্দেহ হয়।
বাসে উঠতে গেলে শুরু হয় এক অন্য রকম প্রতিযোগিতা। এই যখন বাসের অবস্থা তখন এর বাইরেও নানা ঘটনা ঘটে। নারী নির্যাতনের মতো হাজারো ঘটনা ঘটে প্রতিনিয়ত। এর বেশির ভাগই চাপা পড়ে থাকে। চালকের সহকারী থেকে শুরু করে বাসে দাঁড়ানো যাত্রীও নারীকে হয়রানি করতে ছাড়েন না৷
এছাড়া মাঝে মাঝেই নারীদের সাথে কিছু পুরুষের বির্তক দেখি,বেশিরভাগই উত্তক্ত্যের প্রতিবাদ।
এসব প্রতিবাদের উত্তরে শুনতে হয়, বাসে এত ঝামেলা হলে,গাড়ি কিনে নিতে পারেন না?
কিছুদিন আগে টাঙ্গাইল বাইপাস থেকে সন্ধ্যায় বাসে উঠলাম, বাসে কয়েক জন মধ্য বয়স্ক নারীও ছিলেন। বাসে সিট খালি নেই তবে ইঞ্জিনের উপরের সিটে বেশ কয়েকজন পুরুষ বসে আছেন।
বাসের সহকারী মামা নারীদের বসতে দেবার অনুরোধ করলেন, কারণ অনেক ভীড় ছিল। দাঁড়ানো কষ্টকর ছিল।
এক যুবক সহকারীর অনুরোধ শুনে রেগে গিয়ে বলেন, " নারীরা যদি মায়ের জাত হয়, আমরা তাহলে বাপের জাত, আমরা সিট ছাড়ব না।"
এর জেরে ঐ ছেলের বয়সী যুবক বাবার বয়সের সহকারী মামাকে অশ্রাব্য গালাগালি করেই থামেননি, গায়েও হাত তুলেছেন।
আমি খুব অবাক হয়ে গেলাম, বিন্দু মাত্র ছাড় দেবার মানসিকতা আমাদের নেই।
বৈষম্য পিছু ছাড়েনি প্রতিবন্ধীদেরও, অনেক বাসই তুলতে চায় না প্রতিবন্ধীদের।
সরকারী উদ্যোগ আর আমাদের সহযোগিতাই পারে গণপরিবহনে বৈষম্য দূর করতে। সুশৃঙ্খল নিরাপদ গণপরিবহন চাই। যাতে নির্ভয়ে যাতায়াত করতে পারে আমাদের মা, বোন।
স্লোগান হোক 'বিকৃত মানসিকতা পরিহার করি, নিরাপদ গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ি।'