আধুনিক হচ্ছি, কিন্তু মানবিক হচ্ছি কি?

আমাদের মানবিকতা, বিবেকবোধ, অন্যকে ভালোবাসার ক্ষমতা দিন দিন যে হ্রাস পাচ্ছে তা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

আমরা তরুণ প্রজন্ম যুগের সাথে তাল মেলাতে ব্যস্ত, কে খেল আর কে না খেয়ে থাকল সেদিকে তাকাবার প্রয়োজন নেই। অপকর্মকেও অনেকে ফ্যাশন হিসেবে চালাচ্ছি বলে মানবিকতার জন্ম আমাদের মাঝে হচ্ছে না বলে আমার মনে হয়।

নিম্ন আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের তালিকায় আসলেও আমাদের মানবিকতার কোনো উন্নয়ন হয়নি। মানবিক মূল্যবোধহীন মানুষকে আমি রোবট বলেই মনে করি।

আর আমাদের কী দোষ?  মূল্যবোধ শিখব কার কাছে? সবাই তো দুর্নীতিতে মত্ত। তাই দুর্নীতির শিক্ষাই নিচ্ছি অনেকে। ফলে কাউকে উপকার করা তো দূরের কথা ঠকিয়ে নিজের উন্নতি করতে দ্বিধা  করছি না। কাউকে সাহায্য করার কথা আমরা চিন্তাও করি না অনেকে।

একদিন কলেজ শেষে বের হতেই কিছু শিক্ষার্থীকে হই হুল্লোড়, ডিম আর ময়দা ছুড়তে দেখা গেল। একজন শিক্ষার্থীকে ডিম আর ময়দা মেখে পাগলের মতো দেখাচ্ছে। ভেবেছিলাম এটা হয়তো র‍্যাগিং এর অংশ।

কিন্তু না যাকে পাগলের মতো লাগছে সেদিন তার জন্মদিন। পাশে থাকা রিকশা চালক কপালে হাত রেখে বলতে শুনলাম, "ইস আমাগো একদিনের কামাই, যার জন্য এত্ত কষ্ট করে গতরে খাটি।"

খারাপ লেগেছিল কথাটা শোনার পর। এ কেমন জন্মদিন! ঐভাবে ডিম, ময়দা নষ্ট করার চেয়ে যে খেতে পায় না, ভিক্ষা করে তাকে দিলেও তো হয়।

আমরা অযথা কত টাকা নষ্ট করি, তাতে আমাদের গায়ে লাগে না। রিকশাওলা পাঁচ টাকা বেশি চাইলে তাকে মারতে যাই। অনেকে মারেও। ঐভাবে জন্মদিন পালন না করে এই শীতে বন্ধুরা মিলে তো গরিব, অসহায়ের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করতে পারি। অন্যেকে সাহায্যে করে যে আনন্দ পায় সেই ব্যক্তি মূল্যবোধ সম্পন্ন।

আমাদের মতো তরুণরাই পারি অসহায়ের সহায় হয়ে মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন এইদেশ গড়তে।