মায়ের টানে

ইসলামপুরে ২০১৬ সালে আমার জীবনের একটি ঘটনার কথা বলছি। আমার মায়ের কথা বলছি।
মায়ের টানে

বছরের শেষ দিকে মেসে থেকে এসএসসি পরীক্ষার ভালোই লেখাপড়ার প্রস্তুতি চলছিল। নিয়মিত লেখাপড়া করছি। প্রতিদিনকার মতোই দিন শুরু হলো। হঠাৎ করে ফোন বেজে ওঠে। দেখি ঢাকা থেকে মা ফোন করেছেন। গলা শুনেই বুঝতে পারলাম মা অসুস্থ।

মা জানাল তার খুব অসুখ। কয়েকদিন থেকে কিছুই খেতে পারছে না এমনকি কিছুই ভালো লাগে না তার। কথা শুনে আমার লেখাপড়া আর ভালো লাগে না। মনে হলো এখনই উড়ে মায়ের কাছে চলে যাই। কিন্তু মা বলল তার জন্য চিন্তা না করতে। বরং আমাকেই নিয়মিত খাওয়া দাওয়া আর লেখাপড়া করতে বলল। আমাকে বাড়ি যেতে বারণ করল। এমনিতেও আমার কাছে বাড়ি যাওয়ার মতো টাকা ছিল না। 

মা বারণ করলেও আমার মন মানছে না। এক বড় ভাইয়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মাকে না জানিয়েই, জীবনে প্রথম অচেনা ঢাকা শহরে মায়ের কাছে ছুটে যাই।

সেখানে চিনি না কোনো বাসস্টেশন বা ঠিকানা। মাকেও জানাতে পারছি না। শুনলে রাগ করবে তাই অন্য একজনের সাহায্য নিয়ে বাসে ওঠি।

বাসে যত দ্রুত যাচ্ছিল আমার মন তার চেয়ে বেশি দ্রুত মা'র উদ্দেশে ছুটে যাচ্ছিল।

কথায় আছে যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই রাত হয়! বাস জ্যামে পড়ে দেড় ঘণ্টা দেরি। সেই সঙ্গে রাত নেমে আসে। শেষে বাধ্য হয়ে মাকে ফোন করে জানালাম ঢাকা আসার কথা। এবার রাগের বদলে দুশ্চিন্তা শুরু হলো মায়ের।   

এদিকে পথঘাট চিনতে না পারায় আমার গন্তব্য পেরিয়ে চলে যাই। আমি হতাশা নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে পড়ি। কোনদিকে যাব কি করব কিছুই বুঝতে পারি না। মনে মনে ভয় রেখে সামনে দিকে এগিয়ে যাই। শেষে আমি ট্রাফিক পুলিশ আংকেলকে ঠিকানা বললে তিনি আমাকে সঠিক গাড়িতে তুলে দেন। পৌঁছে যাই মায়ের ঠিকানায়। এর পরে কী হলো সেটা ভেবে নেবার দায়িত্ব পাঠকের।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com