সাধারণত ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সটাই কৈশোরকাল এরকমই বলে থাকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ইউএনও)। তাদের মতে এ বয়সসীমার মাঝের সবাই কিশোর বা কিশোরী।
এটাই প্রস্ফুটিত ও বিকশিত হবার বয়স। চোখেমুখে সজীবতার ঝিলিক। কারণে অকারণে ওরা এই বয়সে হাসে-কাঁদে।
আমি নিজে কৈশোর কাল পার করছি তাই জানি, এ সময়কাল সবকিছু ভালোলাগার। জাগে দুরন্তপনা। মনের মধ্যে উচ্চারিত হয়, ‘থাকব না কো বদ্ধ ঘরে দেখব এবার জগৎটাকে’। আবার একই সঙ্গে দেহে ও মনে এসে ভর করে লজ্জা, দ্বিধা ও ভয়ও।
একই সঙ্গে চঞ্চল ও শংকিত এই কিশোর-কিশোরীরা ভাবতে থাকে, কি জানি কি হয়! শারীরিক ও মানসিকভাবে ভীষণ রকম এক পরিবর্তনের মাঝে এসে দাঁড়ায়। এসে যায় শারীরিক ও মানসিক সমস্যা, আসে সামাজিক ও পারিবারিক বিধিনিষেধ। জীবনের গতি তারুণ্যের দিকে মোড় নিতে থাকে।
এ সময় জীবনের বিকাশ কৈশোরের ছায়ায় খানিক আলোছায়ায় ঘেরা। আলো কম, ছায়া বেশি।
পরিবার থেকে তার এ মধুর কৈশোর কৌশলে ছিনিয়ে নেয়া হয়। সে হয়ে ওঠে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা বাংলাদেশের কিশোরী। আমি নিজেও কিশোরী। আর এভাবেই কৈশোর পার করছি এক পা দু পা করে।
কিন্তু কিশোররা হতে চায় বাধা বন্ধনহীন। চায় অ্যাডভেঞ্চার, রোমাঞ্চ। তাদের স্বাধীনতা খানিক বেশি।
এ সময় কিশোর কিশোরীদের মধ্যে ভালবাসা, ঘৃণা, ঈর্ষা, রাগ, ভয়, টেনশন, বোধগুলি তীব্র হয়ে ওঠে। যার ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তাদের আচরণ খানিক পালটে যায়।
এ সময় শুরুতে ভালবাসার প্রকাশ যেমন দাবানলের মত জ্বলে উঠতে পারে; রাগ প্রকাশেও চলে আসতে পারে উগ্রতা। তীব্র আনন্দ অথবা তীব্র ব্যথার বেদনায় কাতর হয়ে যেতে পারে কৈশোরে বা বয়ঃসন্ধিকালে।
আমি জেনেছি, বয়ঃসন্ধিকাল হচ্ছে পূর্ণবয়স্ক মানুষ হয়ে ওঠার মাঝামাঝি সময়। এই সময়ে শরীর ও মনে নানা পরিবর্তন আসে। সাধারণত ছেলেদের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসে ৯-১৪ বছরের মধ্যে আর মেয়েদের ৮-১৩ বছর। পূর্ণতা পেতে আরও প্রায় পাঁচ বছর সময় লাগে।