ছয় সদস্যের পরিবারের দেখভাল করার দায়িত্ব তার। বাবা মা দুজনেই অসুস্থ। ঘরে ছোট ছোট ভাইবোন।
পুরো নাম আব্দুল্লাহ আল মামুন বাবু। গ্রামের বাড়ি শ্যামনগর থানার গাবুরা গ্রামে।
২০০৯ সালের ঘূর্ণিঝড় আইলা তাদের ঠিকানা নিশ্চিহ্ন করে দেয়। এরপর ঠাঁই মেলে নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা অস্থায়ী বস্তিতে। তার সাথে যুক্ত হয় কর্মক্ষম বাবার অসুস্থতা। তখনই পরিবারের হাল ধরতে বাধ্য হয় পরিবারের বড় ছেলে বাবু।
এই বয়সে পড়াশোনা, খেলা আর হুল্লোড়ে বেঁচে থাকার কথা ছিল ওর। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি। বাবুর কৈশোর সোনালি হয়ে ওঠেনি।
এতগুলো মানুষের একটি পরিবার দিব্যি চালিয়ে নিচ্ছে সে। এরমধ্যেও পড়াশোনাকে সে দূরে ঠেলে দেয়নি। সচল রেখেছে দুইয়ের চাকাই।
সবদিক চিন্তা করেই সে পপকর্ন বিক্রির কাজ শুরু করে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের গেইটে। যে সামান্য আয় হয় তা দিয়ে দিনশেষে দুমুঠো খাবার জোটে সবার।
সেখান থেকেও অল্প টাকা সঞ্চয় করে ছোট ভাই বোনদের পড়াশোনার খরচ মায়ের হাতে তুলে দেয় সে। কখনো কখনো সে টাকাও থাকে না।
২০১৬ সালে বুড়ীগোয়ালিনি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৪.৫৫ পেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় বাবু।
এরপর জীবিকার তাগিদে সে পরিবার নিয়ে পাড়ি জমিয়েছে সাতক্ষীরা শহরে। স্বপ্নটা তার অনেক বড়।
সাতক্ষীরা সিটি কলেজে মানবিক বিভাগে প্রথম বর্ষে পড়ছে এখন ও। বাবু স্বপ্ন দেখে একদিন পড়াশোনা করে বড় চাকরি করবে, অসুস্থ বাবার চিকিৎসা করাবে, মাকে নতুন শাড়ি কিনে দেবে, ছোট ভাই বোনদের ঈদের দিন নতুন পোশাক কিনে দেবে। বাবু সব স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে কিনা জানি না তবে মানুষ হয়ত তার স্বপ্নের সমানই বড়।