বাল্যবিয়ের ঘটনার পেছনে বড় কারণ পরিবারের জন্য মেয়েকে বোঝা মনে করা।
যে পরিবারগুলো আর্থিক সঙ্কটে থাকে তারাই সন্তানকে বাল্যবিয়ে দিয়ে বিদায় করে দেওয়ার কথা ভাবে। এই কারণেই দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলোতে বাল্যবিয়ের ঘটনা বেশি ঘটে।
ছেলেদের সমান যদি মেয়েরাও চাকরি কিংবা ব্যবসায় অংশ নেয়। অর্থাৎ দুজনেই যদি শ্রম বিক্রি করে আয় করে। তাহলে দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যায়। এরকম একটা সুন্দর পরিবেশ তৈরির আগে মেয়েদেরও শিক্ষা অর্জনের সুযোগ দিতে হবে।
একটি ছেলের কাছে পরিবার, সমাজ প্রত্যাশা করে সে সাবলম্বী হবে, স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে। কিন্তু একটা মেয়ের কাছেও যদি ঠিক একই প্রত্যাশা করা হয় তাহলে মেয়েরাও শক্তিশালী মনোভাব নিয়ে বড় হতে পারবে। একই সঙ্গে মেয়েদেরকে যোগ্য ও দক্ষ হওয়ার জন্য উৎসাহিত করতে হবে, সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে।
মহামারি করোনাভাইরাসের সময় আমরা দেখেছি অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে, অনেকে চাকরি হারিয়েছে। সংক্রামক রোগ থেকে বাঁচতে খোলা যায়নি দোকানপাট। ইউরোপ. মধ্যপ্রাচ্যসহ নানা দেশ থেকে ফিরে আসতে হয়েছে অনেক রেমিটেন্স যোদ্ধাকে। এমতাবস্থায় অর্থনৈতিক একটা চাপ যে তৈরি হবে এমনটাই তো স্বাভাবিক। এই পরিস্থিতি দেশে বাড়িয়েছে বাল্যবিয়ে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি বিভাগের একটি জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ১৩ শতাংশ করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে তাদের এলাকায় বাল্যবিয়ে হয়েছে বলে জানিয়েছেন। ১১টি জেলার ৫৫৭ জন সাক্ষাৎকারদাতার ৭২ জন এই সময়ে ৭৩টি বাল্যবিয়ের ঘটনা দেখেছেন।
করোনাভাইরাস সঙ্কটে বিদেশ থেকে ফেরত আসা পাত্র পাওয়ায় ৬২ শতাংশ শিশুর পরিবার বিয়ে দিতে আগ্রহী হয়েছে। ৬১ শতাংশে বিয়ে হয়েছে অভিভাবকের সীমিত উপার্জনের কারণে।
বর্তমানে দুর্ভিক্ষ নিয়ে আমাদের সরকারসহ বিশ্ব নেতারাও এটা নিয়ে কথা বলছেন। রাশিয়া ইউক্রেইন যুদ্ধের দিকে বেশি আঙ্গুল তোলা হচ্ছে। সে যাই হোক, দুর্ভিক্ষ যদি হানা দেয় তাহলে বাল্যবিয়ে যে নিঃসন্দেহে আবার বেড়ে যাবে তা নিয়ে কেউ দ্বিমত করার কথা নয়। এমনটা ঘটলে আমাদের দীর্ঘদিনের অর্জন নষ্ট হতে সময় লাগবে না।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৬। জেলা: ঢাকা।