সৌন্দর্যের লীলাভূমি নেত্রকোণা

বাংলাদেশকে বলা হয় প্রকৃতির রূপসী কন্যা। এ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে হাজারো প্রাকৃতিক দৃশ্য যা খুব সহজেই মানুষের মন কাড়ে। তেমনই এক সৌন্দর্যের আধার আমার জেলা নেত্রকোণা। 

এখানে আছে দেশের বিখ্যাত এবং দর্শনীয় কিছু স্থান। এই সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এখানে ছুটে আসেন নানা দেশের নানা পেশার মানুষ। 

নেত্রকোণার আদি নাম কালিগঞ্জ, আয়তন ২৮১০ বর্গ কিলোমিটার। ১৯৭৪ সালে এটি থানায় উন্নীত হয়। এরপর ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১৭ জানুয়ারি একে জেলা হিসাবে ঘোষণা দেয়া হয়। জেলায় ১০ টি উপজেলা এবং ৮৬ টি ইউনিয়ন রয়েছে।

এখানকার মাটি বায়ু ও পরিবেশ এ অঞ্চলের মানুষের মাঝে জাগিয়ে তুলেছে সাহিত্য সংস্কৃতিকে।

এ অঞ্চলে জন্ম নিয়েছেন অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি। তাদের মধ্যে, বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ, এলাহী নেওয়াজ খান, কমরেড মনিসিংহ, ড. হুমায়ূন আহমেদ, কবি নির্মলেন্দু গুণ, কবি হেলাল হাফিজ, খালেক দাদ চৌধুরী।

বিরিশিরিসহ সুসং দুর্গাপুর ও এর আশপাশের উপজেলা কলমাকান্দা, পূর্বধলা, হালুয়াঘাট এবং ধোবাউড়ায় রয়েছে গারো, হাজং, কোচ, ডালু, বানাই প্রভৃতি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস। এদের জীবনধারা যেমন বৈচিত্র্যময়, তেমনি বৈচিত্র্যময় এদের সংস্কৃতিও। তাদের এসব ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ, উন্নয়ন এবং চর্চার জন্য ১৯৭৭ সালে বিরিশিরিতে সরকারি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয় আদিবাসী সাংস্কৃতিক একাডেমি। এখানে প্রায় সারা বছরই নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এ জেলায় দেখা যায় বিজয়পুর পাহাড়ে চিনামাটির নৈসর্গিক দৃশ্য। এখানেই রয়েছে টংক আন্দোলনের জন্য খ্যাত হাজং রাশিমনি স্মৃতিসৌধ, রানীখং মিশন টিলায় ক্যাথলিক গির্জা, দূর্গাপুরে কমলা রাণী দীঘির ইতিহাস, কলমাকান্দা উপজেলার লেঙ্গুরায় মুক্তিযুদ্ধে সাত শহীদের মাজার ও  গারো পাহাড়। দুর্গাপুরে বিরিশিরি ইউনিয়নে আছে আদিবাসী উপজাতীয় কালচারাল একাডেমি।

কেন্দুয়ার রোয়াইল বাড়িতে আছে ‘সুরক্ষিত দূর্গ’, যা ঈশা খাঁর আমলের বহুপূর্বে পাল বংশের রাজারা শাসন কার্যের সুবিধার্থে সম্ভবত তা তৈরি করেছিলেন। কেন্দুয়ার প্রসিদ্ধ গ্রাম জাফরপুরে রয়েছে খাজা উসমানের সময়ে খনন করা ১৮.৩৩ একরের একটি দীঘি যা ‘খোজার দীঘি’ নামে পরিচিত।

এছাড়াও জেলার গয়ানাথের বালিশ মিষ্টিও সারাদেশে বিখ্যাত।  

হাওর অঞ্চল নেত্রকোণায় কংস, ধনু, সুমেশ্বরী, মগরা, বেতাই, সূতী, রাজেশ্বরী, সাইডুলি, বেতাই, পাটকুড়া, ডিঙ্গাপুতা নামের নানা নদ-নদী-হাওর।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com