বাঘ সংরক্ষণে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য প্রতি বছর ২৯ জুলাই বিশ্বব্যাপী পালন করা হয় আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস।
Published : 29 Jul 2016, 11:42 PM
২০১০ সালের টাইগার সামিটে বাঘ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিলুপ্তির হাত থেকে বাঘকে রক্ষা করতেই এ দিবস।
বাঘ দিবস পালনের লক্ষ্য হলো, বাঘের আবাসস্থল সংরক্ষণ করা ও সম্প্রসারণ করা। বাঘ সংরক্ষণের জন্য সমর্থন জোগানও একটি উদ্দেশ্য।
পৃথিবীতে ধীরে ধীরে বাঘের সংখ্যা কমে আসছে। আর এর প্রধান কারণ হলো জলবায়ু পরিবর্তন আর বাঘের আবাসস্থলের সংকট। নগরায়ণ আর কৃষিকাজের ফলে বাঘেরা তাদের ৯৩ শতাংশ আবাসস্থল হারিয়েছে, এমন তথ্য দিয়েছে টাইগার ডে।
টাইগার ডে তাদের পরিসংখ্যানে বলেছে ১৯১৩ সালে বাঘ ছিল এক লক্ষ। ২০১৪ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে তিন হাজারে।
তবে ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড ও গ্লোবাল টাইগার ফোরাম জানিয়েছে সর্বশেষ শুমারিতে তিন হাজার আটশ’ ৯০টি বাঘের তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
গত এক শতাব্দীতে এই প্রথমবার বৃদ্ধি পেয়েছে বাঘের সংখ্যা।
বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হলেও বাঘ যে এখন বিলুপ্তির পথে তা উঠে এসেছে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনেও। তারা জানিয়েছে, জাভান টাইগার, কাস্পিয়ান টাইগার এবং বালি টাইগার ইতোমধ্যে বিলুপ্ত।
আর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সংগ্রাম চালাচ্ছে সাইবেরিয়ান টাইগার, বেঙ্গল টাইগার এবং ইন্দোচাইনিজ টাইগার।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি বাঘ রয়েছে ভারতে। এ সংখ্যা দু’ হাজার দুশ’ ২৬টি। এছাড়া রাশিয়ায় চারশ’ ৩৩টি,ইন্দোনেশিয়ায় তিনশ’ ৭১টি, মালয়েশিয়ায় দুশ’ ৫০টি, নেপালে একশ’ ৯৮টি, থাইল্যান্ডে একশ’ ৮৯ টি, বাংলাদেশে একশ’ ছটি, ভুটানে একশ’ তিনটি, চীনে সাতটি, ভিয়েতনামে পাঁচটি ও লাওসে দু’টি বাঘ রয়েছে। গ্লোবাল ওয়াইল্ড টাইগার স্ট্যাটাসের বরাত দিয়ে তারা এ তথ্য দিয়েছে।
২০১৫ সালে বাংলাদেশের বন বিভাগ ও ভারতের বন্য প্রাণি ইন্সটিটিউটের এক জরিপ জানিয়েছে, সুন্দরবনে একশ’ ছটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার রয়েছে।
চোরাই শিকার,জলবায়ুর পরিবর্তন আর আবাসস্থলের সংকটছাড়াও লোকালয়ে প্রবেশ করলে মানুষের হাতেও অনেক সময় প্রাণ হারায় বাঘ।
পরিবেশের বাস্তুতন্ত্রের জন্য বাঘের গুরুত্ব রয়েছে। যখন একটি প্রজাতি বিলুপ্ত হয় তখন বাস্তুতন্ত্রে তা বিরাট পরিবর্তন আনে। এছাড়া বাঘ বাস্তুতন্ত্রের অনেক বড় একটি শিকারী হওয়ায় এর প্রভাব তুলনামূলক বেশি হবে। আর বাঘ বাঁচাতে হলে বাঁচাতে হবে বাঘের আবাসস্থল। সেক্ষেত্রে বনাঞ্চল বাড়ানো অপরিহার্য। পর্যটন ও আবাস সম্পদে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে বাঘ।
বাংলাদেশের জাতীয় প্রাণি রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এদেশের ক্রিকেট দলকে টাইগার নামে অভিহিত করা হয় বিশ্বব্যাপী। বাঘ বিলুপ্ত হলে যে বাংলাদেশ হারাবে নিজস্ব ঐতিহ্যকে।