শুক্রবার সকালেই ভারতের কুজবিহার জেলা থেকে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে আসেন গীতা রাণী। মাকে বুকে জড়িয়ে ধরার ইচ্ছে থাকলেও মাঝখানে কাঁটাতারের জন্য সেই ইচ্ছে পূরণ হয়নি তার। মা হেনা বালা রাণীর বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের কাস্তোর গ্রামে।
কাঁটাতারের ফাঁকে দেখা ও কথা বলার সুযোগ পাওয়াতেই খুশি বলে জানান মা হেনা বালা।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এ মেলা চলে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সীমান্তে হাজার হাজার মানুষ আপনজনকে এক নজর দেখতে ভিড় করেছে। সীমান্তের প্রায় পাঁচ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে মানুষের ভিড়।
কাঁটাতারারের দু পাশে দাঁড়িয়ে একে অপরের সঙ্গে কথা বলছেন তারা। অনেকে আবার আপনজনকে দেখতে পেয়ে আনন্দে কেঁদেও ফেলছেন।
কথা হয় জেলার পীরগঞ্জের বাঁশগাঁড়া গ্রামের লীনা রাণীর সঙ্গে।
তিনি বলেন, বোনের সাথে দেখা করতে এসেছি। প্রায় ১৫ বছর পর আজ বোনের সাথে দেখা হল। বোনকে একটু ধরে দেখতে পারিনি।
"কাঁটাতারের ফাঁক থেকেই বোনের সঙ্গে অনেক কথা হয়েছে।"
ঠাকুরগাঁও জেলার প্রবীণ বিলাস চন্দ্র রায় জানান, ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর প্রতিবছর বৈশাখের প্রথম দিন এই সুযোগ দিত ভারত। কোন রকম বাঁধা ছাড়াই দুই বাংলার মানুষ স্বজনদের সঙ্গে দেখা করত। এখন পহেলা বৈশাখেও আর সেই সুযোগ হয় না। তাই এই মেলার জন্য সবাই অপেক্ষায় থাকেন। মেলা হলেই ছুটে আসেন।
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী গোবিন্দপুরে পাথর কালির মেলা উপলক্ষে প্রতিবছরই দুই বাংলার মানুষের এ মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়।