তাঁত পল্লীতে পুঁজির অভাব

খট খট শব্দে মুখরিত ঠাকুরগাঁওয়ের কেশুরবাড়ির তাঁত পল্লী। দিন-রাত শীতের কম্বল তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁতি পরিবারের সদস্যরা।

কম্বল কিনতে ইতিমধ্যে গ্রামটিতে ভিড় জমাচ্ছেন পাইকাররা। তবে পুঁজির অভাবে চাহিদা মতো কম্বল তৈরি করতে পারছেন বলে জানান তারা।

সরেজমিনে জানা যায়, নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এখানকার পাঁচ শতাধিক পরিবারের প্রায় ১২শ মানুষ বংশানুক্রমে এখনও তাঁত শিল্পের সঙ্গে জড়িত।

আরও জানা যায়, তারা আগে শাড়ি-লুঙ্গি তৈরি করলেও বর্তমানে শুধু কম্বল তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

দেখা যায়, গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই দুই থেকে ছয়টি পর্যন্ত তাঁত রয়েছে। এর কোনোটা চাকাওয়ালা, আবার কোনোটা একেবারেই বাঁশ-কাঠ দিয়ে তৈরি।

সকাল থেকেই বাড়ির নারী-পুরুষসহ সবাই লেগে পড়েন কম্বল তৈরির কাজে।

স্বপন দেবনাথ নামে এক তাঁতি বলেন, "সুতার দাম এখন অনেক বেশি, কম্বলও বেশি বিক্রি হয় না।


"এই কম্বল বিক্রির টাকায় কোনমতে চলছে সংসারের খরচ।"

৮০ বছর বয়সী পরেন্দ্র দেবনাথ বলেন, ছোট থেকেই এই কাজ করেন। এখন তার ছেলে-মেয়েরা করছে। বংশের সবাই এই কাজের সাথে জড়িত।

তিনি বলেন, "আমাদের নিজের কোনো পুঁজি নাই। অর্থনৈতিকভাবেও আমরা এখনও সচ্ছল না। ঋণ নিয়ে সুতা কিনে কম্বল তৈরি করছি।"

সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা পেলে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

প্রতিদিন একজন তাঁতি ১০টির মতো কম্বল তৈরি করতে পারেন বলে জনান নির্বাণ চন্দ্র নামে একজন।

তিনি বলেন, "পাইকারিভাবে সর্বনিম্ন  দু'শ থেকে সর্বোচ্চ তিনশ ৫০ টাকা পর্যন্ত আমরা কম্বল বিক্রি করতে পারি।"

এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে বিনা সুদে ঋণ দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানালেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান তৈমুর রহমান।

তিনি বলেন, "তাঁত শিল্প টিকিয়ে রাখতে ও তাদের জীবনমান উন্নয়নে সরকারিভাবে ঋণ দেওয়া হবে।"

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com