পেটের দায়ে মে দিবসেও কাজ

মে দিবসেও কাজ করতে হয়েছে অনেক শ্রমিককে। এদের মধ্যে বড়দের পাশাপাশি আছে শিশু শ্রমজীবীরাও।

সম্প্রতি ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার শ্রমিকদের সঙ্গে দিনটি নিয়ে কথা বলে হ্যালো।

উপজেলার মাসুদ মোটরসাইকেল সার্ভিসিং সেন্টারে কাজ করেন হরিকৃষ্ণ রায়। শিশু শ্রমজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। এখন বয়স বেড়েছে। এখন তার বয়স ২১ বছর।

মে দিবস নিয়ে কথা উঠতেই ও বলে, "আইজকার দিনটা নাকি শ্রমিকের অধিকার আদায়ের দিন। কিন্তু কাজ না কইরা যদি মিছিল-মিটিংয়ত যাই তাইলে তো হামার আর পেটের ভাত জুটবেনি।"

আক্ষেপ করে বলেন, " যে দিবসই যতই হোক হামাক টাকার জন্য মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কাজ করেই যাওয়া লাগবে।"  

ওর বাড়ি কুশারীগাঁও গ্রামে। পরিবারে দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট সে। বাবা দীনেশ রায় কৃষি কাজ করেন। মা সংসারের কাজ করেন। অর্থের অভাবে অষ্টম শ্রেণির পর আর পড়ালেখা হয়নি ওর। অনেক ছোট কাল থেকেই এখানে কাজ করে ও।

ও বলে, "মে দিবস পরে। আগুত হামার টাকা দরকার। অভাবের সংসারে টাকার খুব দরকার। টাকা ছাড়া চলার কোন উপায় নাই।"

এই কাজ করে দৈনিক ১৫০ টাকা পায় ও। প্রতি মাসে সংসার খরচ বাবদ বাবাকে তিন হাজার টাকা দেয়। কষ্ট করেই বড় হতে চায় ও। স্বপ্ন দেখে বড় হয়ে নিজের একটা মোটরসাইকেল সার্ভিসিং-এর দোকান দেবে।

হরিকৃষ্ণের পাশে বসেই মোটরসাইকেল মেরামত করছিল ১৬ বছর বয়সী আব্দুল জব্বার। ওর বাড়ি বালিয়াডাঙ্গীর নেকমরদে। চার বছর বছর ধরে এখানে কাজ শিখছে ও। এখনও পুরোপুরি কাজ শেখা হয়নি।  

অর্থের অভাবে লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছিল ষষ্ঠ শ্রেণিতে। তবে এ বছর নতুন করে ও অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে।

ও বলে, "নিজের লেখাপড়ার খরচ এখন নিজে চালাচ্ছি। আমি শুধু ঐ স্কুলে গিয়ে পরীক্ষা দিব।"

পড়ার সময় পায় কি না জানতে চাইলে বলে, "কাজ শেষ হইলে রাতের বেলা একটু পড়তে বসি।" 

হঠাৎ করে কেন আবার চার বছর পর স্কুলে ভর্তি হয়েছ জানতে চাইলে বলে, কাজ শিখছি এখানে। জেএসসির সার্টিফিকেট থাকলে চাকরি পাবো সহজেই।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com