জানলাম ওর বাড়ি নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পুটিমারী গ্রামে। পুটিমারী মসজিদের পাশেই ওদের বাড়ি।
বাড়িতে কে কে আছে জানতে চাইলে ও বলে, বোন ছাড়া ওর আর কেউ নেই। ছয় মাস বয়সে ওর মা ওদের ছেড়ে চলে গেছে। আর গত রোজার ঈদের দিন বাবাও মারা গেছেন। ওর বোনের বয়সও খুব কম, ১২ বছর।
ওর কথা শুনে আমি বেশ ধাক্কা খেলাম। এতো ছোট দুজন মানুষ কীভাবে একা একা থাকে ভেবে আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল।
সাগরকে লেখাপড়ার কথা জিজ্ঞেস করার সাহস আমার হয়নি। ভ্যান চালিয়ে সংসার চালায় ও।
বাবা মারা যাবার পর ভাই-বোন খুব অসহায় হয়ে পড়ে। তাই প্রতিবেশীরা মিলে তাকে একটি ভ্যান কিনে দিয়েছে।
শুরুতে প্যাডেল করে ভ্যান চালাতে খুব কষ্ট হতো। এখন ভ্যানে ব্যাটারি লাগানোতে ওর খানিকটা সুবিধে হয়েছে।
ওর দৈনিক আয় একশ থেকে দেড়শ টাকা। এ টাকাতেই কোনো রকমে চালাতে হয় দু ভাইবোনের খাওয়া-পরার খরচ।
ও বলে, বড় হয়ে বেশি বেশি টাকা আয় করে নিজেই বড় একটা গাড়ি কিনবে। আর সেই গাড়ি নিজেই চালাবে।
কলেজের কাছে এসে ওকে ভাড়া দিয়ে নেমে গেলাম। কিন্তু সারাটা দিন ওর কথাই মাথায় ঘুরতে থাকল।