জামালপুর শহরের বাগেরহাটা এলাকার ফুটপাতে হুইল চেয়ারে বসে ছেলেটি বাদাম বিক্রি করে।
Published : 20 May 2015, 12:40 PM
ওর নাম বাপ্পি। প্রতিবন্ধী এই ছেলেটির বয়স ১৭। তার দুটো পাই অচল আর কথাও জড়িয়ে যায়। হাতও খুব স্বাভাবিকভাবে নাড়াচাড়া করতে পারে না। ওর ঝুড়িতে প্যাকেট করা বাদাম বেচে পথচারীদের কাছে।
জামালপুর জেলার বাগেরহাটা এলাকায় বাবা-মার সাথে থাকে বাপ্পি।
এভাবে ঘুরে ঘুরে বাদাম বিক্রি করতে কষ্ট হয় তাই ও এখন রোজ তার রোজগারের কিছু টাকা একটা ফান্ডে জমা করছে। একটা দোকান করে সেখানে বসেই যেন রোজগার করতে পারে এটাই এখন ওর একমাত্র লক্ষ্য।
একটি জনকল্যাণ সমিতি ওকে হুইল চেয়ারটি দিয়েছিল। পঙ্গু হয়ে বাড়িতে বসে থাকা বা ভিক্ষে করা ছাড়া উপায় ছিল না। কিন্তু বাপ্পি ভিক্ষে করতে চায়নি। ও চেয়েছিল স্বাবলম্বী হয়ে বাবা-মাকে সাহায্য করতে।
বাপ্পি এখন দৈনিক প্রায় তিন চারশ টাকার বাদাম বিক্রি করে। তাতে যা লাভ হয় তা থেকে নিজের খরচ চালায় এবং পরিবারকে কিছু দেয়।
ওঠা বসা খাওয়া দাওয়ার কাজে মাঝে মাঝে ওর মা সাহায্য করলেও ও নিজের দেখাশোনা নিজেই করার চেষ্টা করে। বাদাম বিক্রির সময় রাস্তায় কোন সমস্যা হলে আশেপাশের লোকজন ওকে সাহায্য করে।
ছোটবেলায় বাগেরহাটা সরকারি প্রাইমারি বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হতে গিয়েছিল। প্রতিবন্ধী বলে ভর্তি হতে পারেনি। পরে ও কাচারি পাড়া ‘সুইট বুদ্ধি প্রতিবন্ধী’ স্কুলে ভর্তি হয়। সেখানেই বাংলা পড়তে আর নাম লিখতে শেখে। বছর তিনেক সেখানে পড়ার পর ৩৫ টাকা পুঁজি নিয়ে রাস্তার ধারে বাদাম বিক্রি করতে শুরু করে এক বছর আগে।
বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। ওর বাবা লিটন আহমেদ আর মা ফিরোজা বেগম।