মেয়েটির নাম উম্মে হাবিবা শ্রাবণী। বয়স ১৪। আমার মতোই কৈশোর পার করছে সে। কিন্তু শিক্ষকের করা 'অপমানে' না বুঝেই নিজের জীবনের ইতি টানল সে।
নারায়ণগঞ্জের গণবিদ্যা নিকেতন স্কুলের ছাত্রী শ্রাবণী বসেছিল বার্ষিক পরীক্ষায়। বৃহষ্পতিবার পদার্থবিদ্যা পরীক্ষায় নকলের অভিযোগে শিক্ষক তার খাতা কেড়ে নেন। তবে খাতা কেড়ে নিয়েই ক্ষান্ত ছিলেন না তিনি। বকাবকি করেন, চড় দেন। আর এতে শ্রাবণী পরিণত হয় সবার হাসির পাত্রে।
আর এর ফলে ক্ষোভ ও আবেগের বশবর্তী হয়ে আত্মহত্যা করে ও। তবে আত্মহত্যা করার আগে চিরকুটে সে নিজেকে ‘নির্দোষ’ লিখে গিয়েছে। আত্মহত্যা করার মতো সিদ্ধান্ত হয়তো ভুল ছিল। তবে প্রশ্ন উঠতেই পারে শিক্ষক কী বাড়াবাড়ি করেননি?
নকল করা অবশ্যই কোনো ভালো কাজ নয়। তার জন্য যদি শাস্তি দিতেই হয় তাহলে শিক্ষক খাতা কেড়ে নিতে পারতেন। জানাতে পারতেন তার অভিভাবককে। কিন্তু উলটো তাকে চড় মেরে শাসানোর অধিকার তার নেই।
আইন অনুসারে শিক্ষার্থীদের শারীরিক শাস্তি প্রদান করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ২০১০ সালের ৯ অগাস্ট শারীরিক শাস্তি প্রদান নিষিদ্ধ বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক পরিপত্র জারি করে।
পরিপত্র জারি করার পাঁচ বছর কেটে গেলেও তা ভেঙেই চলছেন শিক্ষকেরা। এমনকি ক’দিন আগে মেরে শিক্ষার্থীর মাথা ফাটানোর অভিযোগ উঠে চুয়াডাঙ্গার এক কিন্ডার গার্টেন স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। হরহামেশাই এমন খবর চোখে পড়ে।
শিক্ষার্থীরা নানা ভুল ভ্রান্তি করতেই পারে। তবে তা সমাধানের পথ কী মারধর করা? মোটেই না। তাদের শুধরানোর জন্য অভিভাবককে জানানো যেতে পারে। শুধরানোর জন্য মারধরের বিকল্প ও ভালো পথের অভাব নেই।
শুধু তাই নয় আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি। মারধর করলে শিক্ষকের প্রতি কখনো সম্মান নয়, ভয় জাগে। আর যারা সুন্দরভাবে বুঝিয়ে সঠিক পথ দেখান তাদের জন্য মনে সম্মান তৈরি হয় আপনাআপনি।