পার্কের হকার বৃত্তান্ত

কয়েকদিন আগের কথা। আমরা কয়েক জন বন্ধু মিলে বিকেলে চন্দ্রিমা উদ্যানে ঘুরতে গিয়েছিলাম। আমাদের পাশেই একটা ভাইয়া ও আপু বসে গল্প করছিলেন।

হঠাৎ দেখলাম একজন হকার কোল ড্রিঙ্কস কেনার জন্য তাদের খুব সাধাসাধি করছেন। দেখেই মনে হচ্ছিল তারা বিরক্ত হচ্ছেন। তারা কিনতে অস্বীকার করলে লোকটি তাদের সামনে দুটি ক্যান খুলে রেখে দেন।

বলেন, "কিনেন, আপনারা না কিনলে আমরা খাব কী?"

এরপর ছেলেটি তাকে ক্যানগুলো নিয়ে যেতে বললেন। কিন্তু লোকটি তাদের কথা শুনল না। ছেলেটি রেগে গিয়ে হকারটির সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আশপাশ থেকে আরও কয়েকজন লোক চলে আসে। এসে ছেলেটির বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করে।

অগত্যা কোনো উপায় না দেখে ছেলেটি ক্যান দুটো কেনে। টাকা দিতেও গিয়েও বিপত্তি। দেখা যায় ক্যানের বাইরে যে মূল্য লেখা আছে তার চেয়ে বেশি টাকা দাবি করছে লোকটা।

লোকটি জানায়, পার্কের ভেতরে নাকি দাম একটু বেশি।  

শুধু ক্যান নয় চা, কফি, চিপস সবকিছু নিয়েই হকারদের এই বাড়াবাড়ি প্রায়ই চোখে পড়ে।  

আমি ও আমার বন্ধুরা প্রায়ই সেখানে আড্ডা দিতে যাই।  তাই নিয়মিত এই ঘটনাগুলো চোখে পড়ে।

পার্কে একটু স্বস্তি খুঁজতে আসা মানুষদের এভাবে হয়রান করে। এদের লক্ষ্যই থাকে পার্কে আসা ছোট ছেলেমেয়েদের ওপর। কারণ এমন ঘটনার মুখোমুখি হলে তারা ঘাবড়ে গিয়ে সহজেই টাকা দিয়ে দেয়।

আমার কয়েক দিনের অভিজ্ঞতায় মনে হল এর পেছনে একটা বড় চক্র রয়েছে। নয়ত এত সাহস তার পায় কোথায় থেকে?

পার্কে দর্শকের ভূমিকায় বসে থাকেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা। তাদের এসব দেখেও না দেখার ভান দেখে আমি বেশ অবাক হলাম। তাদের কী ওই মুহূর্তে কিছুই করার নেই। তারা এসে একটু ধমক দিলেই তো ছোট ছোট ছেলেমেয়েগুলোকে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় না। তাদের নীরবতা এই অন্যায়গুলোকে প্রশ্রয় দেয়।    

শুধুমাত্র চন্দ্রিমা উদ্যানেই নয় এই চোখে পড়ে রমনা পার্ক, সোহরাওআরদী উদ্যানসহ ঢাকার প্রায় সব পার্কেই।

শুধুমাত্র আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সজাগ দৃষ্টি আর সচেতনতাই এ 'প্রতারণা' চক্র থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে পারে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com