ছেলে-মেয়ের বিভেদ দূর হোক

আমার বাবা-মা দুজনেই প্রগতিশীল ও স্বাধীনচেতা মানুষ। তারা পারিবারকে খুব কড়াকড়ি শাসনের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখেননি। জন্ম থেকে এই পরিবেশে বড় হয়ে উঠেছি বলেই আমি নিজেও অনেকটাই স্বাধীনচেতা।

আমাদের পরিবারে ভাই-বোন, ছেলে-মেয়ে নিয়ে আচরণের ক্ষেত্রে কোনো বিভেদ নাই। সংস্কার নাই। আমরা এক ভাই এক বোন। পরিবারে দুজনেই সমান অধিকার পেয়ে বড় হচ্ছি। খাবার-দাবার, পোশাক, চলন-বলনেও আমাদের কোনো ভিন্নতার মুখোমুখি হতে হয়নি। এরকম পরিবারে বড় হচ্ছি বলেই অন্য কোথাও এই বৈষম্য বা বিভেদগুলো চোখে পড়লে মন ভীষণ খারাপ হয়ে যায়।চ

আমাদের পাশের বাসার এক আন্টি কথায় কথায় উনার ছেলেদের কথা বলেন। তার ছেলেদের ভাল খাবার, ভালো পোশাক, চলাফেরা জন্য বেশি বেশি হাত খরচা দিতে হবে সেসব গল্প বলেন গর্ব ভরে। অথচ উনার মেয়ের ব্যাপারে বলেন, মেয়েদের এতকিছু লাগে না। ওরা তো কদিন পর পরের বাড়ি চলে যাবে। মেয়ের জন্যে কিছু করে তো লাভ নাই। ছেলেরা তাকে ভাত কাপড় দেবে, দেখাশোনা করবে, ইত্যাদি ইত্যাদি।

একজন মায়ের কাছে সন্তান তো সন্তানই! তবে কেন এই ভিন্নতা?

এতো কিছু উপেক্ষা করেও যখন কোনো মেয়ে সামনে এগোতে চায়, তখনও তাকে যদি পারিবারিক বাধার মুখে পড়তে হয় তাহলে আর কে দেবে তাকে ভরসা?  

পরিবারেই যদি এই বৈষম্য তাহলে বাইরের জগতে মেয়েদের ঠাই কোথায়?

ছেলে-মেয়েতে সম্পর্কের ক্ষেত্রেও মেয়েটির জন্যও বাবা-মা সমাজে মুখ দেখাতে পারেন না অথচ ছেলেটির পরিবারে তেমন হেরফের চোখে পড়ে না।

মা বলেন, এ ব্যাপারে মেয়েদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। পরিবারে তার গুরুত্ব বুঝিয়ে দিতে হবে। নিজেকে মর্যাদার আসনে দাঁড় করাতে পড়ালেখায় খুব ভালো ফল করে সমাজে স্বনির্ভর হয়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ছাড়া উপায় নাই।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com