আমার গাঁও, আমার রাজেশ্বরী

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার ছোট্ট একটি গ্রাম জাফরপুর। পাশ দিয়েই বয়ে গেছে রাজেশ্বরী নদী। এই গ্রাম আর নদীর তীরেই কেটেছে আমার শৈশব। এখানের মাঠে ঘাটে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অনেক স্মৃতি।

গাঁয়ের অনেক কিছুই আর আগের মতো নেই। সেই রাজেশ্বরী তার রাজত্ব হারাতে বসেছে। শীর্ণ রূপ দেখে মাঝে মাঝে নিজেই চমকে উঠি। একি! এক সময় যে নদীতে পাল তোলা নৌকা ছুটত, যে নদী পথ গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগে কাজে লাগত তার আজ কি দশা! লাবণ্য হারিয়ে দৈর্ঘ্যে, প্রস্থে ও গভীরতায় ক্ষীণ হয়ে এসেছে। তবুও সে আমার রাজেশ্বরী!

আমার এই গ্রামটি অনেক প্রাচীন। এই গ্রামের জাফরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯১৮ সালে। এখানেই পড়ালেখায় হাতখড়ি আমার।

এই গ্রামে একটি প্রকাণ্ড দিঘী আছে। এর আয়তন ১৮.৩৩ একর। এই দিঘীটি  'খোজার দিঘী' নামে খ্যাত। আরো আছে একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত মসজিদ। এই মসজিদের ব্যাপারে কেউ তেমন কিছু জানেন না। তবে দীঘি সম্পর্কে লোকমুখে নানা কথা প্রচলিত আছে। কেউ কেউ মনে করেন এটি রাতের অন্ধকারে অলৌকিক ভাবে তৈরি হয়েছে। আবার কেউ মনে করেন কোনো এক প্রভাবশালী লোক এক রাতের মধ্যেই নির্মাণ করেছিলেন এটি।

লোক মুখে গল্প শুনেছি এক সময় নাকি আমাদের গ্রামে বড় কোনো অনুষ্ঠান হলে আয়োজনের প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাওয়া যেত পুকুর থেকে। এই যেমন বড় পাতিল, থালা বাসন। পরে কোনো এক অসাধু ব্যক্তি জিনিস নিয়ে ফেরত না দেওয়ায় এখন আর সেসব পাওয়া যায় না।

তবে স্থানীয় বিভিন্ন পত্র পত্রিকা থেকে জানা গেছে ভিন্ন এক ইতিহাস। পত্র পত্রিকায় উল্লেখ আছে যে, দীঘিটি খাজা উসমানের আমলে খনন করা হয়েছিল। তবে সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ না থাকায় ধীরে ধীরে অস্তিত্ব হারাচ্ছে এটি।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com